নাগরিক প্রত্যাশা; কেমন মেয়র চাই? 

inside post
৯ মার্চ ভোট। কেমন মেয়র চাই?  নতুন মেয়রের নিকট প্রত্যাশা কী? আমাদের নগরী কিভাবে নান্দনিক হবে?  এসব বিষয়ে নবীন-প্রবীণ ভোটাররা কথা বলেছেন সাপ্তাহিক আমোদ-এর সাথে। নাগরিক ভাবনার চুম্বকাংশ তুলে ধরেছেন
অফিস রিপোর্টার আবু সুফিয়ান রাসেল।
কিশোর গ্যাং দমনে কাজ করতে হবে
নগরীর তালপুকুর পাড় এলাকার  মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,
মেয়রের অনেক দায়িত্ব।  জলাবদ্ধতা ও যানজটের পাশাপাশি কিশোর গ্যাং দমনে কাজ করতে হবে।  কারণ কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা।  যিনি জনবান্ধব তাকে আমরা চাই। যারা চেয়ারে বসেন, তাদের অনেকের প্রশাসনিক দক্ষতার অভাব থাকে। তাই ঠিকভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হয়ও না। তিনি যেহেতু দলীয় পরিচয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেননি। তার কার্যালয় হবে স্বতন্ত্র। সব দলের লোক মেয়রের নিকট সমান। নিজেই এ কর্পোরেশন পরিচালনার দক্ষতা রাখতে হবে। কারো কথায় চলা যাবে না।
-সিভিল কোর্ট কমিশনার, জর্জ কোট, কুমিল্লা।। 
সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই
অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার জাহান বলেন, আমরা সৎ দক্ষ, জন বান্ধব ও নারী বান্ধব মেয়র চাই। একই সাথে যিনি  নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং যানজট সমস্যার সমাধান করবেন।
তার নিকট একটি পরিচ্ছন্ন যানজট মুক্ত নিরাপদ ও আধুনিক নগরী প্রত্যাশা করি। যে নগরীতে তরুণদের জন্য খেলাধুলা, বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।  কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করে তরুণদেরকে দক্ষ জনশক্তি  হিসেবে গড়ে তুলবেন।কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই সিটি কর্পোরেশনের  স্কুল-কলেজের সংখ্যা বাড়ানো।  পার্ক বিনোদন ক্লাবের ব্যবস্থা করা মেয়রের মৌলিক দায়িত্ব।
-ব্লাস্ট কুমিল্লা ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর। 
নতুন নয়টি ওয়ার্ডে কবরস্থান চাই
অধ্যক্ষ এম এম জহিরুল ইসলাম চৌধুরী
  নতুন নগরপিতা বা নগরমাতা কুমিল্লাকে সাজাবেন আধুনিকতার ছোঁয়ায়। যানজটমুক্ত শহর গড়তে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
বর্তমান সময়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করা। তাই মাদকের বিস্তার রোধে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন সেই আশা করছি।
কুমিল্লা শহরকে আরো পরিচ্ছন্ন হিসেবে গড়তে আধুনিক ড্রেনেজ  সিস্টেম চাই। ময়লা আবর্জনা যাতে শহরের বাতাসকে  দূষিত করতে না পারে সেই লক্ষ্যে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চাই। কুমিল্লা ইপিজেডের শিল্প বর্জ্য থেকে পরিবেশকে রক্ষার জন্য দূষণ বোধক ব্যবস্থা গ্রহণ চাই। কুমিল্লা শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাইটিং সিস্টেম দরকার। এছাড়াও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নতুন নয়টি ওয়ার্ডের যেকোনো একটিতে সরকারি কবরস্থান চাই।
-হিরাপুর-মোস্তফাপুর।
কান্দিরপাড়ে পাবলিক টয়লেট নাই
ঝাউতলা এলাকার বি. এম. মালেক রিপন বলেন,  
মেয়রের কাজ একজন এমপি থেকেও বেশি। তাই যাকে তাকে ভোট দিলে হবে না। যিনি দক্ষ, অভিজ্ঞ তাকে নির্বাচিত করতে হবে। একই সাথে যিনি মেয়র হবেন। তিনি সর্বসাধারণের মেয়র হবেন।
গত ১০-১৫ বছরে নগরীতে শতশত বহুতল ভবন হয়েছে। যার অর্ধেক অবৈধ। যিনি মেয়র হবেন। তার প্রথম কাজ হোক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। সড়ক বড় করতে হবে। জিবির নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। জনবহুল এ শহরের প্রাণ কেন্দ্র কান্দিরপাড়।  যেখানে দরকার নেই এমন স্থান মোগলটুলিতে পাবলিক টয়লেট করেছে।
কান্দিরপাড়ে পাবলিক টয়লেট স্থাপন করতে হবে।
-চেয়ারম্যান, মালেক-নূরজাহান ফাউন্ডেশন।
নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে
পুলিশ লাইন্স এলাকার বাসিন্দা হেরা ফালাক আলীশা বলেন,একজন রাজনীতিবিদ হচ্ছেন যুবসমাজের পথপ্রদর্শক। নেতৃত্ব প্রদানের জায়গা থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরে তাদের বার্তা পৌঁছে যায় খুব সহজেই। তাদের  সামাজিক সংগঠনমুখী করে গড়ে তোলা যেতে পারে।  এতে করে যুব সমাজ বিপথগামীতা থেকে দূরে সরে যাবে।  শিক্ষা এবং স্বশিক্ষার দৃষ্টান্ত স্থাপনে অগ্রসর হতে পারে। নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য প্রতি বছর বিভিন্ন সভা সেমিনার আয়োজন করা যেতে পারে।   সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য নিজস্ব জেলা ও দেশের সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার নয় বরং কার্যকারী ধাপে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। নগরীর পাবলিক লাইব্রেরির বিষয়টি প্রচারণার মাধ্যমে জানানো এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে এর উৎকর্ষতার মান যাচাই করা।  বিনোদন কেন্দ্র গুলো সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, মশার উপদ্রব, পর্যাপ্ত গাছ ও রাতে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। মোট কথা নিরাপদ নগরী চাই।
শিক্ষার্থী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ।
ওয়ার্ড ভিত্তিক পাঠাগার তৈরি করা যেতে পারে
চকবাজার এলাকার  সুপ্রিয়া রায় বলেন,  
 পুরো শহর আজ ধুলার রাজ্যে পরিণত হয়েছে৷ এ বিষয়টির স্থায়ী সমাধান চাই। সবুজের মধ্যে বাঁচতে চাই। তরুণদের দক্ষ করার জন্য প্রতি ওয়ার্ড ভিত্তিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র পরিচালনা করা যেতে পারে। ওয়ার্ড ভিত্তিক পাঠাগার তৈরি করা যায়।  যেখানে তরুণীরাও বই পড়তে পারেন।
টাউনহলের মুক্তমঞ্ছটি সন্ধ্যার পর যথেষ্ট অনিরাপদ।  সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। বিনোদনের অন্যতম একটি অংশ সিনেমাহল। কিন্তু বর্তমানে কুমিল্লায় এমন কোনো সিনেমাহল নেই যেখানে পরিবার বন্ধুবান্ধবসহ সিনেমা দেখতে পারবো। সিটি কর্পোরেশন থেকে সিনেমাহল করা যেতে পারে।
-সভাপতি, সমতট পড়ুয়া (সাহিত্য সংগঠন)।
আরো পড়ুন