নাঙ্গলকোটের ৩৪টি সড়কের বেহাল দশা

অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের গুরুত্বপূর্ণ ৩৪টি সড়কের প্রায় ১শ কিলোমিটারের বেহাল দশায় এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বেহাল দশায় সড়কগুলো সংস্কার না করায় উপজেলার যোগাযোগ ব্যাবস্থা কার্যত ভেঙ্গে পড়েছে। অধিকাংশ ছোট-বড় সড়ক গত ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সংস্কার না করায় এলাকাবাসীকে চরম ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এমন অনেক সড়ক রয়েছে, যে সড়কগুলো গত ১০বছরেও সংস্কার কাজ করা হয়নি। এসব সড়কগুলোতে পা বাড়ালেই অসংখ্য খানা-খন্দক দেখা যায়। বিশেষ করে, বর্ষাকালে বিধ্বস্ত সড়কগুলো দিয়ে যাতায়াতে সবচাইতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে উপজেলার ছোট-বড় গুরুত্বপূর্ণ ৩৪টি সড়কের প্রায় ১শ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার চিত্র উঠে এসেছে। এসব সড়কগুলো দিয়ে এলাকাবাসীকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এল জি ই ডির) আওতায় নির্মিত ছোট-বড় গুরুত্বপূর্ণ এসব সড়কের অধিকাংশ সড়কে পা বাড়ালেই বিধ্বস্ত সড়কের হাতছানি চোখে পড়ে। বিধ্বস্ত সড়কগুলোতে ইট-সুরকি এবং কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়ে খানা-খন্দক দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। সড়কগুলোর একেকটি খানা-খন্দক ছোট-বড় যানবাহন এবং পথচারীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ছোট-বড় খানা-খন্দকে পড়ে যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। সড়কগুলো দিয়ে যাতায়াতে অসুস্থ রোগীদের আরো অসুস্থ হতে হয়।
সরেজমিনে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, নাঙ্গলকোট-মাহিনী সড়ক, অলিপুর-মন্তলী সড়ক, শান্তিরবাজার-পিপড্ডা সড়ক, ছুপুয়া-শান্তির বাজার সড়ক, নাঙ্গলকোট-খিলা সড়ক, রাজারবাগ-মান্দ্রা সড়ক, বাইয়ারা-মান্দ্রা সড়ক, হাসানপুর-কানকিরহাট সড়ক, ঘোড়াময়দান টাওয়ার থেকে গোহারুয়া ২০ শষ্যা হাসপাতাল সড়ক, মানিকমুড়া বাজারের উত্তর দিক থেকে আটিয়াবাড়ি সড়ক, চাঁন্দগড়া-বটতলী সড়ক, তালতলা-বাইয়ারা সড়ক, বাঙ্গড্ডা-চারজানিয়া সড়ক, মৌকরা-মোড়েশ্বর সড়ক, বটতলী-দৌলখাঁড় সড়ক, কাশিপুর-মুরগাঁও সড়ক, মন্নারা-চৌকুড়ি সড়ক, ফতেহপুর-তিলিপ সড়ক, আলিয়ারা-গোমকোট সড়ক, বাসন্ডা-বেল্টা সড়ক, ঝাটিয়াপাড়া-বেল্টা-বাসন্ডা সড়ক, মাহিনী-কুকুরিখিল সড়ক, মৌকরা-নারান্দিয়া সড়ক, চৌকুড়ি-সাতবাড়িয়া সড়ক, নাঙ্গলকোট-মেরকোট সড়ক, মেরকোট-তুঘরিয়া সড়ক, মাধবপুর-নাঙ্গলকোট স্টিল ব্রিজ সড়ক, মেরকোট-লুদুয়া সড়ক, খাঁটাচৌ (ডিপজল) থেকে গোমকোট বাজার হয়ে আলিয়ারা সড়ক, মৌকরা মাদ্রাসা থেকে আলিয়ারা সড়ক, তেজের বাজার থেকে সিজিয়ারা বাজার হয়ে চালনা সড়ক, আনন্দ বাজার থেকে-সিজিয়ারা সড়ক, ঢালুয়া-বক্সগঞ্জ সড়কের মগুয়া থেকে চিওড়া সড়ক, চডিয়া বাজার-আটিয়াবাড়ি-বিনয়ঘর সড়ক।
তাছাড়া নাঙ্গলকোট-খিলা সড়কের পৌরসভার দৌলতপুর, হেসাখাল বাজার, রাজারবাগ-মান্দ্রা সড়কের মুরগাঁও, ভবানিপুর, মান্দ্রা, বাইয়ারা-মান্দ্রা সড়কের বাহুড়া, আশিরপাড় হয়ে মান্দ্রা পর্যন্ত বেহাল দশা বিরাজ করছে। হাসানপুর-কানকির হাট সড়কের সবচাইতে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। বটতলী-দৌলখাঁড় সড়কটিরও বিভিন্নস্থানে বেহাল দশা বিরাজ করছে। গ্রামীণ সড়ক ঘোড়াময়দান টাওয়ার থেকে গোহারুয়া ২০ শয্যা হাসপাতাল সড়ক এবং মানিকমুড়া বাজারের উত্তরদিক থেকে আটিয়াবাড়ি সড়কটিতে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এভাবে প্রত্যেকটি সড়কের বিভিন্ন্স্থানে ইট, সুরকি এবং কার্পেটিং উঠে বেহাল দশা বিরাজ করছে। ফলে সড়কগুলো দিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ ছোট, বড় সবধরণের যানবাহনকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে।
বাইয়ারা গ্রামের জসিম ভেন্ডার, ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান বলেন, বাইয়ারা-মান্দ্রা সড়কটি গত প্রায় ১০বছর পর্যন্ত সংস্কার না করায় এলাকাবাসীকে চরম দূর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। হেসাখাল গ্রামের শাহজাহান বলেন, নাঙ্গলকোট-খিলা সড়কটির বিভিন্নস্থানে কার্পেটিং ও ইট, সুরকি উঠে সড়কটি যাতায়াতে একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।


রাজামবাগ-মান্দ্রা সড়কে যাতায়াতকারী ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা চালক আবুল কালাম বলেন, সড়কটির বিভিন্নস্থানে খান্দা-খন্দকের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি যাতায়াতে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে প্রায় সময় অটো রিক্সা নষ্ট হয়ে যায়। চাটিতলা গ্রামের হারুন মজুমদার বলেন, চাটিতলা-আটিয়াবাড়ি সড়কটি দিয়ে গত ১০বছর যাবত এলাকাবাসীকে দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিশেষ করে চাটিতলা কুদ্দুছ মজুমদারের বাড়ি অংশ, কালাচৌ এবং চডিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কটির বেহাল দশা বিরাজ করছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নাঙ্গলকোটের বিভিন্ন সড়কের সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে অনেকগুলো সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। অনেকগুলো সড়কের সংস্কার কাজ অনুমোদন ও টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া অনেক সড়ক বিভিন্ন প্রজেক্টে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বরাদ্দ সাপেক্ষে সংস্কারের কাজ করা হবে।