কুমিল্লার উঠানে উঠানে কৃষাণ-কিষানিদের স্কুল

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
ইউসুফপুর। কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের একটি গ্রাম। গ্রামের কৃষক মোসলেম উদ্দিনের বাড়ি। বাড়ির উঠানে পাটি বিছিয়ে বসেছেন কৃষক-কিষানিরা। কৃষকরা কেউ জমি থেকে উঠে উসেছেন, পা ধুয়ে আসলেও হাঁটুর পাশে কাদা শুকিয়ে আছে। কিষানিরা লাজুক ঘোমটা টেনে শিক্ষকের কথা শুনছেন। প্রতি মাসে বসে এই কৃষক স্কুল। এখানে নিরাপদ ফল ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এতে বিষমুক্ত ফল ফসল পাচ্ছেন এলাকাবাসী। নিরাপদ ফল ফসলের ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরাও।
সূত্রমতে,কুমিল্লার ১৭ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের উঠানে উঠানে বসছে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকদের স্কুল। দেবিদ্বার উপজেলার পৌরসভা ব্লকের ভোষণা, জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারেরা ও ইউসুফপুর ইউনিয়নের ইউসুফপুর গ্রামে এই স্কুল বসে।
ইউসুফপুর গ্রামের কৃষক মুসা আহমেদ,রউফ মিয়া,কিষানি বকুল আক্তার ও আলেয়া বেগম বলেন,আগে ফল,সবজি ও ধানের জমির পোকা মারতে বিভিন্ন ওষুধ দিতাম। যা পরিবেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর ছিলো। কৃষক স্কুলে এসে এই বিষয়টি জেনেছি। আমরা এখন সেক্সফেরমেন ফাঁদ,হলুদ ট্র্যাপ ও মেহগনি বীজের রস দিয়ে পোকা দমন করি।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা লিটন চন্দ্র দত্ত ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন,আমরা কৃষক-কিষানিদের নিয়ে কৃষক স্কল পরিচালনা করছি। বছরে ১৪টি ক্লাস নিচ্ছি। এতে কৃষক-কিষানিদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারা সেক্সফেরমেন ফাঁদ,হলুদ ট্র্যাপ ও জৈব বালাই নাশক প্রয়োগ করে পোকা দমন শিখছেন। এছাড়া পরিমিত সার ব্যবহার শিখছেন।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার(আইপিএম)জন্য উপজেলার ৩টি ব্লকে কৃষক স্কুল চালু রয়েছে। পার্টনার প্রোগ্রামের মাধ্যমে আরো ৯টি স্কুল চালু করা হবে। কৃষকদের হাত ধরে এই উপজেলার ফল ফসল নিরাপদ ও বিষমুক্ত হবে বলে আশা করছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন,জেলায় বর্তমানে নিরাপদ ফসল উৎপাদনে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। জেলায় বর্তমানে ৪৪টি কৃষক স্কুল চালু রয়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে।