পিডাইয়া লম্বা করে দেয়ার নির্দেশ গোলাম সারোয়ারের
প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোটভাই গোলাম সারওয়ার বলেছেন, সাবধান, আমাদের কিন্তু এখনও রক্তমাংস আছে। খালি আপনারাই আমাদের কিছু করবেন আর আমরা কিছু করতে পারব না, এটা ভুল। আর যারা তাদের সহযোগিতা করে আগে তাদের পিটাইয়া লম্বা করেন। একদম সোজা করে পিডান। এটা আমাদের বহু উপরের নির্দেশ, এটা অনেক উপরে আলোচনা হইছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এ কথা জানে। তিনি বলছে তোমরা কী করো? তোমরা পিডাচ্ছো না কেন? হুকুম দেওয়া লাগবে? তাহলে কেন করতেছেন না আপনারা? আর আপনারা যদি আপনাদের অধিকার ছাইড়া দেন আমাদের কিচ্ছু করার নাই।
তিনি তার নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যার যা আছে তা নিয়ে প্রস্তুত হন। সাড়ে তিন হাইত্যা লাডি, আড়াই হাইত্যা লাডির চেয়ে বড় কোনো অস্ত্র অইতে পারে না। এডা আরম্ভ করেন, দেখবেন সব দালালের দালালি বন্ধ হয়ে যাবে। সব সোজা হয়ে যাবে। এই হুমকি দেওয়ার জন্য তারা কি মেশিনগান নিয়ে আসবে? আর পুলিশ প্রশাসন, বিডিআর র্যাব বসে বসে আঙুল চুষবে না কি? হেই দিন গেছে গা। সুতরাং যারাই স্বপ্নডা দেখেন তাদেরকে অনুরোধ করব স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেন, এগুলা কইরেন না। মানুষের যেন রক্তক্ষরণ না হয়।
মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত ৯টার দিকে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর বাজারে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে কাপ পিরিচ প্রতীকের পথসভায় বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এখন আর পিছনে ফেরার কোনো উপায় নেই আমাদের। তার (হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হাই বাবুল) সাথে কিছু দালাল ঢুকে গেছে। দালালদেরকে কান্দিরপাড় পার করেন। আমাদেরকে বাঁচতে হবে। পুঁটিমাছ মরতে গেলেও দশ লাইল (আইল) ঘুরে মরে। আমরা কি পুঁটিমাছের চেয়ে খারাপ হয়ে গেছি? আমাদেরকে এভাবে হুমকি দেবে ধামকি দেবে, আমরা কি বসে বসে আঙুল চুষব না কি? আপনাদের গায়ে রক্তমাংস নাই? তাহলে আপনারা এখনও জেগে উঠছেন না কেন?
তিনি বলেন, আপনার অধিকার আপনাকেই ফিরিয়ে নিতে হবে। একবার ফিরে দাঁড়ান, দেখবেন জীবনে আর হুমকি দিবে না। আমি আজকের এই পথসভা থেকে আপনাদেরকে অনুরোধ তাদেরকে, তারা যা করতেছে এটা যেন আর না করে। সাবধান, আমাদের কিন্তু এখনও রক্তমাংস আছে। খালি আপনারাই আমাদের কিছু করবেন আর আমরা কিছু করতে পারব না, এটা ভুল।
গোলাম সারওয়ার বলেন, আমরা ২১ তারিখে একটা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন দেখতে চাই। আমি প্রশাসনকে বার বার বলছি, যদি এই এলাকায় কোনো বহিরাগত ঢুকে, তাহলে আমিও লালমাই, নাঙ্গলকোট থেকে হাজার হাজার ঢুকাই দিমু এই এলাকায়। তারা সব রেডি থাকবে।
আমরা কোনো এলাকায় যাই না। আমাদের এলাকায়ও কেউ যেন মাতব্বরি না করে। তাদের লজ্জা থাকা উচিত। আমরা কোনো এলাকায় যাই না এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ। তারা কেন এই এলাকায় এসে এত লাফালাফি করবে? কেন হস্তক্ষেপ করবে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আদেশ অমান্য করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছেন যেন কোনো এমপি কোনো উপজেলায় কাউকে প্রভাবিত না করে হস্তক্ষেপ না করে। উনি (এমপি) বাহার কি প্রভাবিত করতেছেন না? কীসের জন্য? কীসের স্বার্থে? আমরা কী অন্যায় করছি? আমরা নাকি সব শেষ করতেছি। উনি (এমপি বাহার) কইত্থেকে এই কথা শুনলেন? উনি কী করছেন আমরা দেখিনাই? উনার এলাকায় একটা ব্রিজ করতে পারেননি আজকে ১৫ বছর, উনি অনেক বড় নেতা। আমরা এগুলো বলতে চাই না। কিন্তু আমাদেরকে বলার জন্য বাধ্য করতেছে।
তিনি বলেন, আমরা সবাইকে সম্মান করতে চাই। উনিও আমার নেতা। উনি কেমন নেতা যে নেতা আমাদের ভালোমন্দ দেখবে না! আমাদের সুখ-শান্তি দেখবে না! কেমন নেতা উনি? উনি খালি বাবলুকে নিয়ে আছে। উনি বাবলুকে বহিষ্কার করেননাই? ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি দখল করছিল। পরে বাবলুকে বহিষ্কার করছিল। উনি ওর মধ্যে কী মজা পাইছে আমি জানি না। এই বাবলুই প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে বলেছে, ২০০২ সালের পরে, দুলাল হত্যার সময়, বলছে যে এই বাহার হচ্ছে খুনি তার বিচার হওয়া উচিত। এখন সেই বাবলুকে নিয়ে উনি পড়ে আছেন। আমরা এর পিছু ঘুরতে চাই না, ঘুরিও না।
উল্লেখ্য, আগামী ২১ মে ২য় ধাপে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন । তারা হচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু (কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী) ও ইঞ্জিনিয়ার আক্তারুজ্জামান রিপন। বর্তমান চেয়ারম্যান তার প্রতিটি পথসভায় এমপি বাহারের সমর্থনে বহিরাগত লোক এসে তার নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করে যাচ্ছেন।