বক্সগঞ্জ বিদ্যালয়ের নতুন কমিটির পরিচিতি সভা

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঐতিহ্যবাহী বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নব গঠিত কমিটির সাথে শিক্ষক মন্ডলী ও শিক্ষার্থীদের পরিচিতি সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান সোমবার বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সভার কাজ শুরু করা হয়।

বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্য সচিব মাস্টার আলী আশ্রাফ মিলনের সভাপতিত্বে পরিচিতি ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব সভাপতি মজিবুর রহমান মোল্লা। বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া বিএসসি, কমিটির অভিভাবক সদস্য মনির হোসেন, নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহজাহান, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শহিদুল আলম ভূঁইয়া, সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শাহরিয়া আক্তর ও সমৃদ্ধি অধ্যায় প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন রিয়াজ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন জনি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল মাহমুদ ভূঁইয়া বাহার, সাহিত্য ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দুলাল মিয়া, সদস্য আবদুর রহিম বাবলু, মাওলানা ইউসুফ আলী, কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি লক্ষণ চন্দ্র মজুমদারসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাগণ এবং প্রয়াত শিক্ষকবৃন্দ এলাকার বিশিষ্টজনদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। এর আগে কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি ও নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব সভাপতি মজিবুর রহমান মোল্লা বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনে বিদ্যালয়টিকে এতঞ্চলের মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করবো। তবে বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা দেখে আমি হতাশ হয়েছি। বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব, সায়েন্স ল্যাব ও ভৌত অবকাঠামো নেই। বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো নিয়ে আমাকে এ পর্যন্ত কেউ বলে নাই। বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা তলাবিহীন ঝুঁড়ির মতো হয়েছে। বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো বিদ্যালয়ের সমস্যগুলো থেকে কিভাবে উত্তরণ করা যায়। আমি বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করবো। শিক্ষকদেরকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যালয়ের উন্নয়নে আমার সবটুকু মেধা, শ্রম ও মনমানসিকতা উজাড় করে দেব। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো সমস্যা রয়েছে। শিক্ষকদের সমন্বয়ে সেগুলো চিহিৃত করে অবকাঠামোর জন্য চেষ্টা করবো। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করবো। এজন্য যা-যা করার দরকার আমি সব করবো। এজন্য বিদ্যালয়ের আশে-পাশে বনায়ন করবো। এক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আর্থিক অস্বচ্ছলতায় কোন শিক্ষার্থীর লেখাপড়া যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবো। আর্থিক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করে তাদের সমস্যার কথা জানালে আমরা তাকে সাপোর্ট দেব। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের ড্রেস পরে বিদ্যালয়ে আসতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে তাদের মেধার বিকাশ ঘটানো হবে। এছাড়া লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যাতে আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান করতে পারে তাও নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ইভটিজিংকে কোনভাবে টলারেট করা হবে না। যারা করবে তাদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হবে। ছাত্রীরা নির্বিঘ্নে বিদ্যালয়ে আসবে। বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে আমি যতদিন বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকবো, ততদিন বিদ্যালয়ের প্রতিটি টাকা সঠিকভাবে ব্যয়, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। এজন্য বিভিন্ন উপ-কমিটি করে দেওয়া হবে। আমার মধ্যে কোন লোভ-লালসা, হিংসা ও অহংকার নেই। তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আমাকে ভাই, বন্ধু ও আত্মীয়স্বজন হিসেবে দেখবেন। আমরা একটি পরিবারভুক্ত হয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। যাতে করে বিদ্যালয়ের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করতে পারি। তিনি বিদ্যালয়টির সার্বিক উন্নয়নে স্থানীয় এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।