বানভাসিরা পর্যাপ্ত সরকারি ত্রাণ পাচ্ছে না: টুকু

অফিস রিপোর্টার।।

বানভাসিরা পর্যাপ্ত সরকারি ত্রাণ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক,কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আমিনুর রশিদ ইয়াছিন।

টুকু  বলেন, সারাদেশে বন্যার্ত ও বানভাসি মানুষ না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে, সরকার পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ দিতে পারছে না। বন্যার্ত মানুষরা বলছে, তারা সরকারি রিলিফ পাচ্ছে না। সাধারণ মানুষজনদের জিজ্ঞাসা করলে তারা হাত তুলে বলেছন, সরকারি ত্রাণ পাই নাই।

টুকু বলেন, জনগনের কল্যাণ এখন আর এই সরকারের লক্ষ্য নয়। মেগা প্রজেক্ট নিয়ে তাদের মনোযোগ। কারণ সেখানেই লাভ বেশি, মধু বেশি। এখন এই মেগা প্রজেক্টগুলো দুর্নীতি আর টাকা পাচারের উৎস্য হয়ে উঠেছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ-নেত্রকোনা-ফেনী-কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে দলের নেতৃবৃন্দের ত্রাণসামগ্রী বিতরণে ক্ষমতাসীন দলের বাধা প্রদানের অভিযোগ করেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক। এ সময় তিনি ফেনীর ফুলগাজী ও গাজীপুরে সরকারি দল ও পুলিশের বাধা প্রদানের ঘটনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় বানভাসি মানুষের হাহাকারে যখন আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠেছে, বন্যার্তদের জন্য সরকারি সাহায্য যখন নিতান্তই অপ্রতুল। সে সময়ে তাদেরকে সরকারি ত্রাণ দেয়া তো দূরের কথা বিএনপি ত্রাণ সামগ্রী দিতে গিয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে। লাঠিসোঠা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি সভায় অতর্কিতে হামলা চালাচ্ছে, নেতা-কর্মীদের আহত করছে। যেটা ফেনীর ফুলগাজীতে ঘটেছে।

টুকু অভিযোগ করেন, বন্যা কবলিত এলাকায় শুধু ত্রাণের অভাবই নয়। সেখানে ওষধপত্রের অভাবে প্রকট আকার ধারণ করেছে। না গেলে বুঝা যাবে না। সেখানে ভয়াবহ অবস্থা। এখন বন্যা কবলিত হাওড় এলাকায় চর্ম রোগ হচ্ছে। ঔষধের অভাবে বন্যার্তরা হলুদ আর কেরোসিন তেল লাগাচ্ছে গায়ে। যা নিজের চোখে দেখিছি।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ত্রাণ কমিটির প্রধান বলেন, আমরা যেখানে গেয়েছি সরকারি ত্রাণ দেখিনি। আমরা যাচ্ছি, সরকারি কর্মকর্তারা ফেরত আসছে বা যাচ্ছে এরকম কোনো গাড়ি বা নৌকা কোনটাই হাওড় এলাকায় দেখি নি।

বিএনপি তার সীমিত সামর্থ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সেবা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বানবাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ অধিকার দিচ্ছি। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ত্রাণ দিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাচ্ছেন। বিএনপিসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ সব অঙ্গসংগঠন এখন বন্যার্তদের পাশে রয়েছে।

টুকু বলেন, গণমানুষের দল হিসেবে বিএনপি এরই মধ্যে লক্ষাধিক পরিবারকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। এবার আমরা পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে নিয়ে যাওয়া, ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসা, ঔষধপত্র বিতরণ, গৃহনির্মাণ, কৃষকদের সহযোগিতা, বীজতলা সরবারহ প্রভৃতির মাধ্যমে বন্যার্তদের সহযোগিতা করছি। এই কার্যক্রম আমাদের অব্যাহত আছে, থাকবে।