বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি!

 

ইলিয়াস হোসাইন।।

পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের আসমানী কবিতার মতো মিল এখানে। ‘আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,রহিমদ্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি,একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।’ কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার ৪নং দক্ষিণ খোশবাস ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড হোসেনপুর গ্রামে এই দৃশ্য মিলবে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশা চালক জয়নাল মিয়া। স্ত্রী এবং তিন সন্তানসহ পরিবারের পাঁচ জন সদস্য। তাদের নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পুরোনো টিনে জোড়া-তালি দেওয়া ঘর! দেড় যুগ ধরে এই ভাঙা ঘরেই বসবাস করছেন পরিবারটি। বৃষ্টি এলে চাল বেয়ে পানি পড়ে ঘরে। এছাড়াও ঘরের চারপাশে জমে থাকে ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পঁচা পানি। ভয় থাকে সাপ-জোকেরও। রিকশা চালিয়ে পরিবারের খরচ মিটাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। সন্তানরা পাচ্ছেননা যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার।

 

জয়নাল মিয়া বলেন,প্রায় ১৪বছর ধইরা এই জাগাত থাহি। আমার পায়ের আঙ্গুল কাটা। খোড়ায় খোড়ায় হাঁটতে হয়। পায়ের লাইগা রিকশাও ভালামতন চালাইতে পারিনা। পোলাপাইনের মুখে ভালাবুরা কিছু দিতে পারিনা। মাইয়াডা এইবার এসএসসি পরীক্ষা দিবো। তারেও ঠিক মতন প্রাইভেট পড়াইতে পারিনা,স্কুলের খরচও চালাইতাম পারিনা। ছোড পোলাডাও ইস্কুলে টু-এ পড়ে। টাকার অভাবে বড় পোলাডার পড়া বন্ধ কইরা দিছি। ঘরটাতে তাহন যাইতাছেনা। মেঘ-বাদলের দিনে ঘরে টুপটুপ করে পানি পড়ে। বাহিরে পঁচা পানির গন্ধ। সব মিলাইয়া আমরা একটা কষ্টের জীবন পার করতাছি। কেহ সাহাইয্যের হাতও বাড়ায় না। এর কাছে গেলে বলে তার কাছে যাও,তার কাছে গেলে বলে এর কাছে যাও। এভাবে দৌড়াতে থাকি। কিন্তু কোনো কুলকিনারা দেহিনা।
খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রব বলেন,আমরা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।