বিয়ের রাতে মুক্তিপণের জন্য ভাইকে ফোন বোনের স্বামীর!
অফিস রিপোর্টার।।
বিয়ের রাতে এক লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য ভাইকে ফোন করেন বোনের স্বামী! না হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। পুলিশকে জানালে তাকে ফিরে পাবে না বলেও হুমকি দেয়। এই ফোন পেয়ে ভাই ৯৯৯ ফোন করেন। কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার সহযোগিতায় ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। বুধবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ক্ষতিগ্রস্থ নারী খাদিজা আক্তার। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায়। এনিয়ে ৮জুন কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৩ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। মামলায় তার স্বামী ওমর ফারুকসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান,চলতি মাসের ৫তারিখ তার বিয়ে হয় উপজেলার মালিগাঁও গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ওমর ফারুকের সাথে। বিকালে তাকে শ্বশুর বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানে তাকে তারা মেনে নেয়নি। উল্টো মারধর করে। তখন স্বামী ফারুক তাকে জানান,তারা উপজেলার গৌরিপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকবেন। তিনি সন্ধ্যায় স্বামীর হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। তাকে উপজেলার মোহাম্মদপুর নামের একটি এলাকায় নিয়ে কিছু লোকের নিকট ছেড়ে দেয়া হয়। তারা তাকে মারধর করে তার গায়ের গহনা খুলে নেয়। এসময় তার খালাতো ভাই মেহেদী হাসানকে স্বামী ওমর ফারুক ফোন করে বলেন, এক লাখ টাকা নিয়ে আয়। পুলিশকে জানাবি না। তাহলে তোর বোনকে মেরে ফেলবো। পরে পুলিশের ফোন পেয়ে তারা আমাকে ফেলে চলে যায়। আমি খালার বাড়িতে মাসহ লুকিয়ে আছি। আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছি। যেকোন সময় আমাকে মেরে ফেলবে। তিনি তার সাথে প্রতারণার বিচার চান।
খালাতো ভাই মেহেদী হাসান জানান, খাদিজার পিতা মৃত। আমরা তাদের পরিবারকে দেখভাল করি। আনন্দের সাথে বোনকে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু সন্ধ্যায় বোনের স্বমী ফারুক ফোন করে জানান এক লাখ টাকা নিয়ে আসতে, না হলে তাকে মেরে ফেলবেন। যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ তে ফোন করলাম। দাউদকান্দি থানা পুলিশ ফারুককে ফোন করলে সে ভয়ে বোনকে ফেলে চলে যায়। বোন ওই এলাকা চিনে না। তার সাথে ফোনও নেই। রাতে পুলিশ লোকেশন ট্র্যাকিং করে বোনকে উদ্ধার করেন। সেই সব ফোন রেকর্ড আমার নিকট সংরক্ষণে রয়েছে।
মামলার আইনজীবী জামিল আহমেদ রাতুল বলেন,মামলার বর্ণনার প্রকৃতি দেখে ধারণা করা যাচ্ছে, আসামিরা নারী পাচারকারী। বিয়ের রাতেই ওই নারীর সাথে জঘন্য কাজ করেছে। বিজ্ঞ আদালত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দাউদকান্দি থানার এসআই মো. হারিসুল হক বলেন,আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দ্রুত আদালতে জমা দেবো।
এদিকে অভিযুক্ত ওমর ফারুককের ফোন নম্বর বন্ধ রয়েছে। তার পরিবারের একটি মোবাইল ফোন নম্বরে বার বার চেষ্টা করেও কারো সাথে কথা বলা যায়নি।