বুড়িচংয়ে আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধারের আকুতি

নৌকা ও খাবার পানির তীব্র সংকট
মহিউদ্দিন মোল্লা,তৈয়বুর রহমান সোহেল ।।
পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পড়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। ২২ আগস্ট গোমতীর বুড়বুড়িয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ওই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। আকস্মিক বন্যায় আক্রান্ত এলাকার অনেক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে পারেননি। তাদের অনেকে অবস্থান নিয়েছেন বাড়ির ছাদে। অনেকে গলা সমান পানি ডিঙিয়ে বাড়িতেই রয়ে গেছেন। তারা বাড়ির মায়ায় পড়ে থাকলেও এখন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চান। সেখানে নৌকা ও খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শনিবার বুড়িচং উপজেলার ভরাসার, ইছাপুরা ও খাড়াতাইয়া গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেছে।


সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,কুমিল্লা-বুড়িচং সড়কে অনেক সহায়তা নিয়ে গেছেন। তবে যারা মাইক্রোবাস নিয়ে গেছেন তাদের ফেরত আসতে হয়েছে। কারণ সড়কে বিভিন্ন স্থানে হাঁটু পানি। পানির তীব্র স্রোত। স্বাভাবিক ভাবে পায়ে হাঁটা যায় না। ট্রাক্টর ও পিকআপ ভ্যান নিয়ে মূল সড়কে গিয়ে ত্রাণ দেয়া যাচ্ছে। যারা পিকআপ ভ্যানে নৌকা নিয়ে গেছেন তারা গ্রামের ভেতর থেকে লোকজনকে উদ্ধার করতে পারছেন। কুমিল্লা নগরী থেকে একদল শিক্ষার্থী ট্রাক্টর নিয়ে খাড়াতাইয়া গিয়েছেন। তারা সেখানে নারী ও শিশুদের উদ্ধার করে কুমিল্লা নগরীর স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

খাড়াতাইয়া গ্রামের রেহানা বেগম। একটা আশ্রয় কেন্দ্রে স্বজনদের নিয়ে রেখেছেন। আবার এসেছেন বাড়ি থেকে যদি কিছু কাগজপত্র ও খাবার উদ্ধার করতে পারেন। একটু উঁচু ব্রিজে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু বাড়িতে গলা পানি তাই যাচ্ছেন না। নৌকা হলে তার সুবিধা হতো। তিনি জানান, গ্রামের অনেকে বিভিন্ন ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষ আছেন। তাদের উদ্ধার করতে নৌকা লাগবে।
ইছাপুরা গ্রামের গোলাম মোস্তফা। গত দুইদিন পানিবন্দী তিনি। গোলাম মোস্তফা জানান, পানিবন্দী হওয়ার পর কিছু খাবার পেয়েছি। কিন্তু খাবার পানি পাচ্ছি না। খাবার পানি না পাওয়ায় খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খাবারের চেয়ে খাবার পানি বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।


শিকারপুর গ্রামের নাজমুল হাসান জানান, আমার বাবা ও ভাই তিনদিন ধরে একটি বাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়েছেন। ভাই লিটন এক লিটার পানি নিয়ে ছাদে উঠতে পেরেছেন। সেখানে খাবার ও খাবার পানি কিছুই অবশিষ্ট নেই। সর্বশেষ আজ সকালে তাদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। এখন কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। তাদের মতো ওই গ্রামের ৪০০-৫০০ মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আসা উদ্ধার কর্মী সোহরাব হোসেন শুভ বলেন, দুইদিন ধরে বুড়িচংয়ের পীরযাত্রাপুর, সাদেকপুর, আনন্দনগর, ইছাপুরা, ষোলনলে ত্রাণ বিতরণ করছি। খাবার পানি সঙ্কটে মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে।