বেহাল ভিক্টোরিয়ার ২২ হাজার শিক্ষার্থীর শৌচাগার

নাক- মুখ চেপে বাথরুমে যায় ওরা 
মাকসুদুর রহমান।। 
অপরিচ্ছন্নতায় নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া  সরকারি কলেজের শৌচাগারগুলো। ডিগ্রি, অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের ২২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য নেই পর্যাপ্ত শৌচাগার।
যে ক’টা আছে তা সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিনদিন সেগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয় হচ্ছে।
অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, সংষ্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
দেখা যায়, কিছু টয়লেটে পানির ট্যাপ থাকলেও পানি নেই। আবার কোনো কোনো বিল্ডিংয়ের ওয়াশরুমগুলোতে পানির ট্যাপই নেই। বেশিরভাগ শৌচাগার সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের মুখ, নাক চেপে বাথরুমে যেতে হয়।
 কলেজের একটি টয়লেটেও  সাবান-টিস্যু কিছুই নেই। বাথরুমে জমে থাকে পানি, ভাঙা বেসিন, টয়লেটজুড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে টিস্যু, ছেঁড়া কাগজ, নষ্ট ট্যাব, ইটের টুকরাসহ নানা ধরনের আবর্জনার স্তুপ। এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
 কলা  ভবনের নিচ তলায় দুইটি এবং তৃতীয় তলায় একটি টয়লেট  রয়েছে । তৃতীয়   তলার অবস্থা কিছুটা অনুকূলে থাকলেও নিচ তলার অবস্থা একেবারে নাজুক। কিছু টয়লেটে পানির বদনা নেই। লাইটিং এর ব্যবস্থা নেই, মশার উপদ্রবে টেকা দায়।
কলেজের বিজ্ঞান  ভবনের নিচ তলার টয়লেটের অবস্থা সব থেকে নাজুক। অন্ধকার পরিবেশে নাক কুচকে ঢুকতে হয়। খুব বেশি সমস্যা না হলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী টয়লেটে যায় না,  দ্বিতীয় তলায় রয়েছে একটি   মহিলা টয়লেট, সেগুলোই ব্যবহার করছে সবাই। কলেজের লাইব্রেরি ভবনের টয়লেটগুলো পরিষ্কার দেখা গেছে।
বিএনসিসি সেনা শাখার অফিসের পাশেই  পরিত্যক্ত শৌচাগার  থাকায় বিএনসিসির সিইউও শান্ত দেবনাথ জানান, ব্যবহারের অযোগ্য আমরা ব্যবহার করতে পারি না, তার পাশাপাশি পরিবেশ নষ্ট করছে। তার পাশাপাশি  বিজ্ঞান ভবন দুই ঠিক একই চিত্র দেখা গেছে, নিচ তলায় দুই পাশে ২ টি  টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য। স্যাঁতে বেসিনগুলাও নষ্ট।  দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় কিছুটা ব্যবহার যোগ্য হলেও  কষ্ট করে ব্যবহার করছে শিক্ষার্থীরা।
তবে দু’য়েকটা ভবনের  শৌচাগারগুলোর অবস্থা ভালো। এর মধ্যে প্রশাসনিক ভবন  এবং ব্যবসা শিক্ষা ভবন  উল্লেখযোগ্য। সেখানে নোঙরা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ একেবারেই নেই।
পরীক্ষা ভবনের বয়স ১০ বছর। নতুন এ ভবনের অধিকাংশ টয়লেটের পানির কল ভাঙ্গা। অপরিষ্কার। জিয়া অডিটরিয়ামের প্রবেশ পথের দু’পাশের টয়লেটগুলো অপরিষ্কার।  প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলার টয়লেটের দরজার ছিটকিনি  নেই।  এ ভবনের তিনতলার টয়লেটও অপরিষ্কার।
ব্যবসায় শিক্ষা ভবনের টয়লেটগুলো সংকীর্ণ ও ব্যবহারের উপযোগী নয়। শুধু অর্থনীতি ভবন, মিলিনিয়াম ভবন ও প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলার শৌচাগার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেখা গেছে।
বিজ্ঞান ভবন ২ এর টয়লেটগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না।
কলেজের শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিভাগের শরিফুল ইসলাম  বলেন, ২২হাজার শিক্ষার্থীর জন্য টয়লেট  হিসাবে কম। ‌ সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে ব্যবহারের পর পরিষ্কার রাখত  তাহলে টয়লেটের এমন বাজে অবস্থা হতো না।
ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ফাতেমা আক্তার বলেন, কলা ভবনে সাতটি ডিপার্টমেন্ট। এখানে চার হাজার ছাত্রী। চার হাজার ছাত্রীর জন্য একটি সিক রুম। সে রুমে মাত্র একটি টয়লেট। যা পর্যাপ্ত নয়। সেখানে গেলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
শৌচাগারের বেহাল দশার নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া  সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, সমস্যাটি দেখবো। যেখানে সমস্যা সমাধান করে দিবো।