কুমিল্লা বিসিকের মুড়ির সুনাম বাড়ছে
অফিস রিপোর্টার।।
কেউ চাল গরম করছেন। কেউ মেশিনে দিচ্ছেন। কয়েকজন মুড়ি বস্তায় ভরছেন। কেউ দরদাম করে বিক্রি করছেন। কয়েকজন শ্রমিক ট্রাকে মুড়ি তুলে দিচ্ছেন। রমজান মাসে এমন ব্যস্ততায় দিন কাটে কুমিল্লা নগরীর বিসিকের মুড়ি কারখানাগুলোর মালিক- শ্রমিকদের। কুমিল্লা বিসিকের মুড়ি চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর কুমিল্লাসহ সারা দেশে চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। বিসিকে বিসমিল্লাহ মুড়ি মিল, ইফতি ফুড ও বেঙ্গল ফুডসহ ৬টি কারখানায় মুড়ি উৎপাদন হয়। মালিকদের দাবি গুণগত মান রক্ষা করে মুড়ি ভাজায় এর সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে।
বিসমিল্লাহ মুড়ির মিলে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ গরম। তার মধ্যে জ্বলছে গ্যাসের চুলা। সেখানে চাল গরম করা হচ্ছে। গরম চাল মেশিনে ফেলার পর বেরিয়ে আসছে শুভ্র মুড়ি। রাত-দিন মেশিনের গর গর শব্দে মুখর চারপাশ। এখানে প্রধানত আছিয়া মুড়ি, গিগজ মুড়ি ও স্বর্ণা মুড়ি ভাজা হয়। আছিয়া ৭০টাকা এবং স্বর্ণা কেজি ৬৫ টাকা ও গিগজ মুড়ি ১৪০টাকা পাইকারি বিক্রি হয়। রমজান উপলক্ষে এই কারখানায় প্রতিদিন প্রায় ১৫টন মুড়ি উৎপাদন হয়। কয়েক বছর আগে সেটা ছিলো ২০-৩০ টন।
শ্রমিকরা জানান, গিগজ মুড়ি সাধারণত হাতে ভাজা হয়। কারখানায় সেই মুড়ি সময় নিয়ে ভাজা হচ্ছে। যাতে হাতে ভাজা মুড়ির স্বাদ পাওয়া যায়। তারা আরো জানান, চাউলের দাম বাড়ায় কেজি প্রতি ১০টাকা দাম বেড়েছে।
মুড়ি কারখানার ফোরম্যান মো. মাসুম জানান, তাদের কারখানায় শুধু চাল আর লবণ দিয়ে মুড়ি ভাজা হয়। এখানে রাসায়নিক মেশানো হয় না। তাই এখানের মুড়ি দিন দিন মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
নগরীর রানীর বাজারের মুড়ির ক্রেতা নাজমুল হোসেন জানান, রমজান উপলক্ষে প্রতি বছর বিসিকে উৎপাদন হওয়া বড় আকারে মুড়ি ক্রয় করেন। চাউলে শুধু লবণ মিশিয়ে মুড়ি উৎপাদন করা হয়,তা খেতেও সু-স্বাদু।
বিসমিল্লাহ্ মুড়ির মিলের পরিচালক ইরফান হাসান বলেন,বাবা মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া মাহফুজ এই ব্যবসা শুরু করেন। আমরা মান রক্ষায় সচেষ্ট। তিনি আরো বলেন, বিসিক শিল্প নগরী এলাকা হলেও আমরা কারখানা ক্যাটাগরির গ্যাস সংযোগ পাইনি। দেয়া হয়েছে কমার্শিয়াল গ্যাস লাইন। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া এখন গ্যাস সংকট হচ্ছে। এতে বেশি সময় লাগছে। বিদ্যুত সংকটে জেনারেটর চালাতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কুমিল্লার ডিজিএম মো. মুনতাসীর মামুন বলেন, কুমিল্লা বিসিকে উৎপাদিত মুড়ি মান সম্মত। তার সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। এখানে কারখানা ক্যাটাগরির গ্যাস লাইন সংযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হবে।
(ছবি:ইলিয়াছ হোসাইন)