কুমিল্লা নগরীর বাসা থেকে মা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার

প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা নগরীতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ও তার মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোরে নগরীর কালিয়াজুরি খেলার মাঠের পাশের একটি নেলী কটেজ ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন গৃহিনী তাহমিনা আক্তার ফাতেমা (৫২) ও তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার রিন্তি (২৩)। সুমাইয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৬ ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলো।
বাড়ির মালিক আনিছুল ইসলাম রানা জানিয়েছেন, চার বছর আগে কুমিল্লার আদালতের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাড়িটি ভাড়া নেন। গত বছর তার মৃত্যুর পর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ফাতেমা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া আফরিন রিন্তি ও তার আরও দুই ছেলে বাড়িটিতে থাকছেন। তারা অন্য কারো সাথে তেমন কথা বলতেন না। গতকাল রাতে তার দুই ছেলে ঢাকা থেকে বাসায় আসলে তারা ঘরের দরজা খোলা দেখে। এই সময় তারা ভাবে তাদের মা ও বোন ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু বাসায় ঢুকার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও তাদের কোন সাড়া শব্দ না পেলে জাগাতে গিয়ে দেখেন তারা নড়ছেন না। পরে ৯৯৯ এ কল পেয়ে সোমবার ভোরবেলা পুলিশ মরেদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে একজন ব্যক্তি রবিবার দিনের বেলায় তাদের বাসায় আসা-যাওয়া করেছিল। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নিহত তাহমিনার বড় ছেলে মোঃ তাজুল ইসলাম ফয়সাল (৩৪) জানান, তারা দুই ভাই এক বোন। ছোট ভাই কুমিল্লা ইপিজেডে চাকরি করেন। তিনি ঢাকায় আইন পেশায় নিযুক্ত। গতকাল ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে যান। তার ভাইও বাসায় ফিরে নিজের রুমে গিয়ে বিশ্রাম নেন। তখন তার মাকে বার বার ডেকেও সাড়া না পেয়ে মায়ের রুমে যান। সেখানে তার মায়ের নিথর দেহ দেখতে পান। বোনের কক্ষে গিয়েও বোনের মরদেহ দেখতে পান। তাজুল ইসলাম ফয়সাল আরো জানান,দুর্বৃত্তরা তার মা ও বোনকে হত্যা করে মোবাইল ফোন ল্যাপটপ, কানের দুল নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, ৯৯৯-এ খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে নেলী কটেজের ২য় তলায় দুটি কক্ষে খাটের ওপর পৃথক ভাবে মা ও মেয়ের মৃত দেহ পড়ে থাকরে দেখেন। তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজ হসপিটালের মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিক ভাবে তাদের দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকা-। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বলা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
