ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টাকার হিসাব নিয়ে একজন নিহত
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ঈদগাহ্ কমিটির নিকট টাকার হিসাব চাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন জাকির হোসেন। ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে পুলিশ আটক করেছেন মনির হোসেন নামের এক যুবককে। এদিকে পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা এলাকার।
শুক্রবার (০৬ মে) রাতে জেলার কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে ঘটে বর্বরোচিত এই ঘটনা। নিহত জাকির হোসেন (৫০) লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত আজিজ সর্দারের পুত্র। এদিকে ঘটনার দায়ে আটকৃত মনির হোসেন (২৫) একই গ্রামের মিলন মিয়ার পুত্র। নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কসবা থানায় দায়ের করেছেন হত্যা মামলা।
নিহতের পরিবার, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের কবরস্থানের খাস ভূমি নিয়ে গ্রামের শিশু মিয়া ও মতিন মিয়ার লোকজনদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে দুই পক্ষের মধ্যেকার সংঘর্ষে নাজির হোসেন নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। গ্রামের আজিজ সর্দারের পুত্র জাকির হোসেন ছিলেন ওই হত্যা মামলার আসামী। এদিকে লক্ষ্মীপুর গ্রামে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠ। গত শুক্রবার রাতে মনির হোসেন ও তার লোকজন ঈদগাহ কমিটির নিকট টাকা-পয়সার হিসাব চায়।এসময় জাকির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বলেন কমিটির সভাপতি করোনাকালীন সময়ে মারা গেছেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মাহাবুব এবং সেক্রেটারি মহসিন মিয়া কেহই উপস্থিত নেই। এখন হিসাব দেওয়া যাবে না। এ নিয়ে মনির হোসেন ও তার লোকজনের সাথে জাকির হোসেন ও তার লোকজনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরই এক পর্যায়ে কিল-ঘুসি ও হাতের টর্চ লাইট দিয়ে জাকির হোসেনকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি ঢলে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোসহ ঘটনার সাথে জড়িত একই গ্রামের মিলন মিয়ার পুত্র মনির হোসেনকে রাতেই আটক করেন। পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
এদিকে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আসমা বেগম বাদী হয়ে কসবা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় কাইমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইকতিয়ার আলম বলেন, ‘ঈদগাহ্ কমিটির নিকট হিসাব চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।’
কসবা থানার পরিদর্শক (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে মূগে। ঘটনার সাথে জড়িত মনির হোসেনকে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে জেলহাজত। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’