ভারেল্লা গ্রামে ১২০ বছরের প্রাচীন মিষ্টির দোকান !

মাহফুজ নান্টু ।।
ইংরেজ শাসনামল থেকেই তৈরি হয় মিষ্টি ও রসগোল্লা। এখনো সেই ধারা অব্যাহত আছে। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রাম। ওই গ্রামে একশ’ ২০ বছর আগে থেকে তৈরি হয় রসগোল্লা, জিলাপি ও রসমলাই। গুণগত মান ও স্বাদে অনন্য। তাই এত বছর পরেও চাহিদাও অনেক বেশী। ঐতিহ্য ধরে রাখতে কখনো কার্পণ্য করেন না রসগোল্লার কারিগররা। তাই মফস্বলের একটি মিষ্টি দোকান হওয়া স্বত্বেও প্রতিদিন অন্তত ৮০-৯০ কেজি রসগোল্লা ও মিষ্টি বিক্রি হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা পশ্চিম বাজারে হাজির মিষ্টির দোকান। দুই ভাগে বিভক্ত। একভাগে মিষ্টি তৈরি করা হয়। অন্যভাগে মিষ্টি ও রসমলাই বিক্রি করা হয়। স্থানীয়দের কাছে দোকানটি এক নামে পরিচিত। যে কাউকে বললে দেখিয়ে দেয়। এই দোকানেই ১২০ বছর আগে থেকে তৈরি হয় মিষ্টি-রসগোল্লা,রসমলাই, দধি, জিলাপীসহ অন্যান্য মিষ্টান্ন। কালক্রমে এখন শুধু রসগোল্লা-রমসমলাই ও জিলাপিই বেশী তৈরি হয়। স্বাদে ও মানে অনন্য বলে বিভিন্ন জেলার মানুষের কাছে খ্যাতি রয়েছে হাজীর মিষ্টির।

বৃহত্তর ভারেল্লা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সুজাত আলী মাস্টার জানান, তার জন্ম ১৯৩৯ সালে। তার জন্মের আগে থেকেই হাজীর মিষ্টি তৈরি হয়। তিনি আরো জানান, বহু পরীক্ষা নীরিক্ষা হয়েছে। বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার মধ্যে এই হাজির মিষ্টি রসগোল্লা রসমালাই অনেক প্রাচীন। স্বাদে ও মানে অনন্য।
রসগোল্লা তৈরি কারিগর ফয়সাল জানান, প্রতিদিন অন্তত ৮০/৯০ কেজি রসগোল্লা তৈরি করেন। পাশাপাশি রসমলাই জিলাপিও তৈরি করা হয়। রসমলাই তৈরিতে সব সময় গরুর দুধই ব্যবহার করেন।
হাজীর মিষ্টির দোকান থেকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে মিষ্টি রসগোল্লা সরবরাহ করেন কুমিল্লা বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি রুবেল আহমেদ শুকরিয়া। লেখাপড়ার পাশাপাশি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে মিষ্টি সরবরাহের কাজটি করেন। তিনি জানান, ভারেল্লা বাজারের হাজির মিষ্টি ও রসগোল্লার অন্য রকম চাহিদা আছে। যে সব ক্রেতা একবার হাজির মিষ্টি রসগোল্লা ও রসমলাই খান তারা আবারো অর্ডার দেন।
হাজীর মিষ্টি দোকানের সেলসম্যান মোঃ আবু কাউছার বলেন, এখানে রসগোল্লা ১৯০ টাকা, কালোজাম ১৬০ ও রসমলাই বিক্রি হয় ২২০ টাকা কেজি দরে। দামে সাশ্রয়ী,স্বাদে অতুুলনীয় বলে দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন।
হাজীর মিষ্টির স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম জানান, ১২০ বছরের অধিক সময় ধরে বংশ পরম্পরায় তারা রসগোল্লা মিষ্টি ও রসমলাই তৈরি করেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০/৯০ কেজি রসগোল্লা বিক্রি করেন। রসমলাই তৈরির জন্য নিজেদের ফার্মের গরুর দুধ ব্যবহার করেন। জেলার অন্যান্য মিষ্টির চেয়ে তাদের তৈরি মিষ্টি স্বাস্থ্য সম্মতভাবে তৈরি হয়। আকারে বড়, খেতে মজাদার দেখতেও আকর্ষণীয়।