ভিক্টোরিয়ার ক্যাম্পাস যেন ভুতুড়ে বাড়ি

লাইটিং ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি
হাসিবুল ইসলাম সজিব।।
প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাস কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। সন্ধ্যা হলেই ক্যাম্পাসের বহিরাগত এবং মাদকসেবীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। দিন দিন বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের আনাগোনাও। মাঝে মাঝে নিজ ক্যাম্পাসে হেনস্তার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। নেই পর্যাপ্ত লাইট। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস হয়ে উঠে ভুতুড়ে বাড়ি। ক্যাম্পাসে লাইটিং ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, সন্ধ্যা হলে মাদক সেবনকারীদের আনাগোনা দেখা যায় ক্যাম্পাসে। হলে থাকা শিক্ষার্থীরা রাতে নিজদেরকে অসহায় মনে করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় মেয়েদের হোস্টেল ইট নিক্ষেপ করা হয়, বহিরাগতরা মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্তা করেন।
অফিস সূত্রে জানা যায়, জুলাই ছাত্র আন্দোলনের আগে ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা ছিলে মোট ৬টি। ৩টি ছিলো নিচতলায় অফিসে বাইরে। বাকি ৩ টা মধ্যে ১টি ম্যুরালের দিকে ফোকাস। বাকি ২ টা প্রশাসনিক ভবনের সামনের দিকে ছিলো। ৫ আগস্ট তা ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে ৩ লাগানো হয়েছিলো। ১টি প্রশাসনিক ভবনে ঢুকার সিড়িতে,১টি ২য় তলায় করিডোরে অন্যটি ভবনের সামনে। মসজিদের ঝামেলা নিয়ে সামনেরটা ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে আর লাগানো হয়নি।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পারভেজ আহমেদ জানান, একটি ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে লাইটিং ও সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা জরুরি। এতে করে সকল ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে ক্যাম্পাস সুরক্ষিত থাকবে। সকল শিক্ষার্থী নিজেকে নিরাপদ বোধ করবে।
ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা বিকেলে ক্যাম্পাসে সময় কাটানোর জন্য আসি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাইট ও সিসি টিভি লাগানো জরুরি।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ (২য় বর্ষ) জিনাত জাহান বলেন, ক্যাম্পাসে বহিরাগত এবং মাদকসেবীদের আনাগোনা দেখা যায়। ক্যাম্পাস লাইটিং এবং সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত না থাকার কারণে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের পিছনে নির্জন জায়গায় বহিরাগতরা বসে আড্ডা দেয়। তাই অধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করবো ক্যাম্পাসটি যেন সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত এবং লাইটিং করে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৩য় বর্ষ মোঃসাব্বির আহমেদ জানান, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। যার ইতিহাস ঐতিহ্য পড়াশোনার মান অন্যান্য কলেজ থেকে এগিয়ে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে কলেজ ক্যাম্পাসে বর্তমানে সকল শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সন্ধ্যা গড়ালেই ক্যাম্পাস যেন একটা ভুতুড়ে পরিবেশের মতো হয়ে যায়। পুরো ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আবাস। কিশোর গ্যাংদের চলাফেরায় দিন দিন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে যাচ্ছে।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, সিসি ক্যামেরা কলেজের কোন কোন স্থানে লাগানো জরুরি সেবিষয়ে মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সাইড-ওয়াল না থাকায় বহিরাগতরা প্রবেশ করে। সাইড ওয়াল নির্মাণের বিষয়ে আমাদের মিটিং গুলোতে আলোচনা হচ্ছে। এখন অর্থ বছরের শেষ মুহূর্ত। নতুন অর্থ বছরের গেজেটের মাধ্যমে কাজ করা হবে।

inside post
আরো পড়ুন