ভিসা হারিয়ে তিনি এখন দিনমজুর!

 

প্রবাসী তিন ভাইয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে
 টাকার হিসাব চাওয়ায় মামলা

প্রতিনিধি।
প্রবাসী ৩ ভাইয়ের পাঠানো অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে অন্য আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে। তিনি কুমিল্লার লালমাই উপজেলার কাছিয়া পুষ্করনী গ্রামের শহীদুল ইসলাম। ওই টাকা ফেরত চাইলে দুই ভাইকে মামলার হুমকি এবং আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা করেন। এ ঘটনায় এক ভাই দেশে আসতে ভয় পাচ্ছেন। মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে ভিসাও খুঁইয়েছেন আরেকজন। তিনি এখন গরু পালন ও দিনমজুরের কাজ করে পরিবার চালাচ্ছেন।


শহীদুলের মা, ভাই ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৭ সালে সৌদি অরব যান কাছিয়া পুকুরিয়া গ্রামের ফুল মিয়ার ছোট ছেলে সুলতান আহমেদ। এর আগে তার মেজ ভাই আমিনুল ইসলাম সৌদি যান। সবার বড় ভাই খলিলুর রহমান সেলিম আমেরিকা প্রবাসী। অসুস্থতার কারণে সেজ ভাই শহীদুল ইসলামকে বিদেশ না পাঠিয়ে বাড়িঘর, সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রবাসী তিন ভাইয়ের উপার্জিত অর্থে চার ভাইয়ের নামেই জায়গা কেনার কথা শহীদুলের। কিন্তু তা না করে তিনি জায়গা কেনেন স্ত্রী ও শ্যালকের নামে। ২০১৭ সালে বিষয়টি জানাজানি হবার পর ভাইদের সাথে তার দ্বন্দ্বের শুরু হয়।
সুলতান আহমেদ জানান, আমরা তিন ভাই প্রবাসে থাকাকালীন সব লেনদেন যেহেতু শহীদুল করতেন, সে কারণে ব্যাংকের চেকগুলো ঘরে থাকতো। ব্ল্যাঙ্ক চেকে আমাদের স্বাক্ষর থাকতো। চেকে প্রয়োজনীয় অঙ্ক বসিয়ে টাকা তুলতেন তিনি। প্রতারণার এক পর্যায়ে সবার চেক বই গায়েব করেন শহীদুল ইসলাম। আর ওই সুযোগ নিয়ে তার থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দিইনি বলে আমার বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা করা হয়। আমার নামে ৬৬ লাখ, ৮৬ লাখ ও এক কোটি ২৬ লাখ টাকার তিনটি চেক ডিজঅনার মামলা করা হয়েছে। মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে ভিসা হারিয়েছি। এখন মানবেতর জীবন যাপন করছি।
শহীদুলের আমেরিকা প্রবাসী ভাই খলিলুর রহমান সেলিমের স্ত্রী রিনা আক্তার জানান, আমার স্বামী থেকে দেড় কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন শহীদুল ইসলাম। টাকা ফেরত চাইলে সে মামলার হুমকি দেয়। আমাদের দুটি চেক বইও সে নিয়ে গেছে। আমরা তা ফেরত চাই।
শহীদুলের ভাই প্রয়াত আমিনুল ইসলামের ছেলে মো. সিয়াম জানান, বাবার জানাযার সময় ৪০লাখ টাকা ফেরত দেবার কথা বলেন শহীদ চাচা। পাঁচ বছরে তিনি মাত্র ৪০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।
শহীদুলের মা মমতা বেগম বলেন,সুলতানকে শহীদুল টাকা দিতে আমি দেখিনি। মামলা নিয়ে আমাদের ঘরে অশান্তি তৈরি হয়েছে। আমি এটির সমাধান চাই।
অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে সে বিষয়ে আমি ডকুমেন্টসহ কথা বলবো। তাদেরও ডকুমেন্টস দেখাতে বলেন।
ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান একরাম হোসেন বলেন, শহীদুল ইসলাম মূলত ভালো মানুষ নয়। সে নিজের ভাইসহ আরো অনেকের সাথে প্রতারণা করেছে।