মনোনয়ন বঞ্চিত ১৩ নেতাকে নৌকার প্রচারণার অনুরোধ
আমোদ প্রতিনিধি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে অভিমান ভুলে প্রচারণার জন্য মনোনয়ন বঞ্চিতদের প্রচারণার অনুরোধ করা হয়েছে। শুক্রবার ঢাকায় ধানমন্ডি দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুরোধ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হওয়ার তিন দিন আগে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুর।
সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী।
বৈঠক সম্পর্কে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও মনোনয়ন বঞ্চিত অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বলেছি আওয়ামী লীগের মনোনয়নের পদ্ধতি পরিবর্তন করার জন্য। কারণ, দল যখন মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেছে তখন আমরা সংগ্রহ করে জমা দিয়েছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মনোনয়ন চাওয়ার কারণে আমরা শত্রু হয়ে গেলাম। যিনি মনোনয়ন পেলেন তিনি তো এক দিনের জন্যও কাজ করতে বললেন না। রিফাত ভাই কাজ করতে না বললেও আমার নেতাকর্মীরা নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করছে।
আঞ্জুম সুলতানা সীমা এমপি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সভা হয়। সভায় নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন আচরণবিধির কারণে প্রচারণায় অংশ নিতে পারব না। কিন্তু আমার নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুর বলেন, দলে প্রতিযোগিতা থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। যারা মনোনয়ন পাননি তারা সবাই যোগ্য নেতা। তাদের মান অভিমান ভুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারাও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে ছিলেন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা ও মো. ওমর ফারুক, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম শিকদার, মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নুর উর রহমান মাহমুদ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শ্যামল চন্দ্র ভট্টাচার্য, ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মাহবুবুর রহমান, মহি উদ্দিন মাহী।
দলীয় সূত্রমতে, গত ৫-১১ মে পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। এতে ১৪ জন দলীয় মনোনয়ন পেতে আবেদন ফরম জমা দেন। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ-সম্পাদক আরফানুল হক দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর বঞ্চিত ১৩ নেতাকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৪১ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতেও রাখা হয়নি। তারাও প্রচারণায় নামেননি। বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ কুমিল্লার একটি হোটেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে ১৩ নেতা ও এর বাইরে শ্রমিক নেতা মনির হোসেন ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহীনুল ইসলামকে ঢাকায় তলব করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।