মেয়র পদে বিদ্রোহীসহ ৬ প্রার্থী, নারী আসনে ৩৮ ও সাধারণ ওয়ার্ডে ১২০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল

 

inside post

আমোদ প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ৬ প্রার্থী। মঙ্গলবার (১৭ মে) শেষ দিনে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকার প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এছাড়াও শেষ সময়ে এসে রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন দলের প্রবীন নেতা প্রয়াত অধ্যক্ষ আফজল খানের বড় ছেলে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এফবিসিআইয়ের পরিচালক বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। ইমরানের পক্ষে বিকাল ৪টা দিকে ওই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জসিম উদ্দিন আহমেদ নামের একজন বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও নৌকার প্রার্থী ও বিএনপির দুই প্রার্থীসহ মেয়র পদে ৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ছাড়া নগরীর ২৭ ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৩৮ ও সাধারণ ওয়ার্ডে ১২০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এছাড়াও স্বতন্ত্র পদে সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল সাক্কুর পক্ষে তাঁর ছোট ভাই এডভোকেট মো. কাইমুল হক রিংকু এবং কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দীন কায়সার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর আগে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম ও নাগরিক কমিটির প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল।

আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ‘স্বতš’¿ পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করার বিষয়ে বিকালে মাসুদ পারভেজ খান ইমরান খান বলেন, আমি বিদ্রোহী প্রার্থী না, স্বতন্ত্র পদে নির্বাচনে মাঠে থাকবো। আমার অনেক নেতা-কর্মী,অনুসারী ও সাধারণ জনগণ চাচ্ছে আমি নির্বাচনে থাকি, তাদের অনুরোধে নির্বাচন করতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার পর নগরী রীতিমত একটি ডাস্টবিনে পরিনত হয়েছে। নির্বাচন করে আমি বিজয়ী হতে পারলে যানজট, জলাবব্ধতাসহ নাগরিকদের প্রধান সমস্যা গুলি চিহিৃত করে সমাধানের উদ্যোগ নেব।’ ইমরান খানের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন ছোট কর্মীও যদিও দলের মনোনয়নের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করে এটা ‘স্বতন্ত্র’ নয় ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে ধরে নেয়া হয়। সুতরাং কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করলে বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দেখবেন, এ নিয়ে আমার এর চেয়ে বেশী কিছু বলার নেই।’
অপর দিকে বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র পদে দলের দুই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। বিএনপি থেকে বহিস্কারের বিষয়ে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘যে কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করতেই পারে। আমি তো এখনো প্রচারণাই শুরু করিনি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৯ মে। আমার মনোনয়ন বৈধ হওয়ার পর দলের কাছে অব্যাহতি চাইবো। কিন্তু এর আগে আমাকে দল থেকে বহিস্কার করলে কিছুই করার নাই। বিএনপির অপর প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, নগরবাসী পরিবর্তন চায়। এখন তারুন্যের সময়। আমার ভক্ত-অনুসারী ও সাধারণ ভোটারদের অনুরোধে বিএনপি করলেও স্বতন্ত্র পদে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি বিজয়ী হবো।

উল্লেখ্য ২০১২ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম ও ২০১৭ সালের ২য় নির্বাচনে নৌকাকে হারিয়ে টানা দুইবার মেয়র নির্বাচিত হন সাক্কু। এর আগে ২০০৫ সালের পৌরসভার শেষ নির্বাচনেও জয় পেয়েছিলেন তিনি। এ সিটির ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ জন। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ২০-২২ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ২৩-২৫ মে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে। নির্বাচন হবে ১৫ জুন।

আরো পড়ুন