মোবাইল ফোনের জন্য গলায় ছুরি

 

আমোদ ডেস্ক।।

পূজা দেখে বাড়ি ফিরছিলো বিকাশ চন্দ্র বর্মণ (১৬)। পথে মোবাইল ফোনের জন্য জবাই করা হয় তাকে। নিহতের লাশ তার বাড়ির পাঁচশ’ গজ দূরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। লাশের পাশের অন্য এক ব্যক্তির এক জোড়া জুতাও খুঁজে পায় পুলিশ। গত ৩০ অক্টোবর মুরাদনগর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া জুতা দিয়ে খুনিকে আটকে সহায়তা করে। আটক করা হয় আসামি শাকিবকে (২৪)। সে মুরাদনগর উপজেলার করিমপুর গ্রামের মোঃ হানিফ মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আজিম-উল-আহসান।

সংবাদ সম্মেলন সূত্র ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ আহম্মেদ জানান, গত ৩০ অক্টোবর কুমিল্লার মুরাদনগর সদর এলাকার জেলে পাড়ার প্রহলাদ চন্দ্র বর্মণের ছেলে বিকাশ চন্দ্র বর্মণ (১৬) ল²ীপূজা দেখতে ঘর থেকে বের হন। বিকাশ পেশায় দর্জি। পূজা দেখে ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হয়। বাড়ির অদূরে একটি ছয়তলা দালানের পাশে আশ্রয় নেয় বিকাশ ও তার সঙ্গী উত্তম বর্মণ (২১), অজয় চন্দ্র সরকার (২২) ও আসামি শাকিব। একটি মÐপে চারজন একসাথে নাচ গান করেছিলো। বৃষ্টি না থামায় বিকাশকে রেখে উত্তম বর্মণ ও অজয় চন্দ্র সরকার বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি চলে যায়। তার একটু পরে বিকাশও বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়। বিকাশের পিছু নেয় শাকিব। এক পর্যায়ে শাকিব বিকাশের পথরোধ করে। বিকাশের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিতে ধস্তাধস্তি শুরু করে। শাকিব তার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে বিকাশকে আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় বিকাশ দৌড়ে বাড়ির কাছে চলে যায়।

 

এ সময় শাকিবও দৌড়ে বিকাশের ঘাড়ে আঘাত করে। বিকাশ নিস্তেজ হয়ে পাশের পুকুরে পড়ে যায়। রাত তখন সাড়ে ৩টা। ঝুম বৃষ্টি। সে বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও গভীর রাত আর বৃষ্টির শব্দে তার ডাক কারো কানে পৌঁছেনি। শাকিব তাকে জবাই করে। তিন দফা হামলায় বিকাশের মৃত্যু নিশ্চিত করে ১০হাজার টাকার কম মূল্যের মোবাইল ফোনটি নিয়ে চলে যায় সাকিব। এ সময় সাকিব তার পায়ের জুতাগুলো রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় ২ নভেম্বর অজ্ঞাত আসামি করে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা প্রহলাদ চন্দ্র বর্মণ। পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। লাশের সাথে উদ্ধার হওয়া জুতোর মালিককের সন্ধান করতে থাকে।
নাহিদ আহম্মেদ জানান, উদ্ধার হওয়া জুতা ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট ধরে তদন্ত করি। চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকা থেকে সোমবার রাতে শাকিবকে আটক করা হয়। আটক হওয়ার পর সাকিব স্বীকারোক্তি দেয়, লাশের পাশে উদ্ধার হওয়া জুতো জোড়া তার। সে পেশায় কখনও সিএনজি অটো রিকশা চালিক,কখনও ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা চালক। মোবাইল ফোনের জন্য বিকাশকে খুন করে। এ সময় খুনের কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়।