যুবককে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন

প্রতিনিধি।।
চুরির অভিযোগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নুরুল আলম (২২) নামের এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। সোমবার এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের উত্তর যাত্রাপুর গ্রামে। নির্যাতনের শিকার নুরুল আলম একই গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরের শিকার যুবক ও তার পরিবারের দাবি জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে আম গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে দুই ব্যক্তি লাঠি ও শক্ত এসএস এর পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করছে। আঘাত সহ্য করতে না পেরে ওই যুবক চিৎকার করছিল আর আঘাতকারীরা বলছিল বাপ ডাক। ওই সময় আশেপাশের নারী পুরুষরা এই দৃশ্য দেখছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জায়গাজমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে নির্যাতনের শিকার নুরুল আলমের বাবা আবুল হাসেমের সাথে একই এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে ইসমাইল মিয়া (৫৫) ও শফিক মিয়া প্রকাশ বাচ্চু মিয়ার (৫৯)। বিষয়টি একাধিকবার শালিসী বৈঠকে নিষ্পত্তির চেষ্টা হলেও ইসমাইল ও বাচ্চু মিয়ারা মানেননি। শুক্রবার রাতে আবুল হাসেমের ছেলে নুরুল আলম বাড়ির পাশে মাছ ধরতে গেলে বাচ্চু মিয়ার নিকটাত্মীয় স্বপন ও সোহেল তাকে ধরে এনে আবুল হাসেম নামে অপর অভিযুক্তের বাড়ির আম গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন শুরু করে। ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত নুরুল আলমকে নির্যাতন করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয় চোর ধরেছে বলে। এক পর্যায়ে নুরুল আলম অজ্ঞান হয়ে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তার স্বজনরা নুরুল আলমকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। রবিবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নির্যাতনের শিকার নুরুল আলমের পিতা আবুল হাসেম বলেন, আমাদের সাথে পাশ্ববর্তী বাড়ির ইসমাইল মিয়া ও বাচ্চু মিয়াদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধে আদালতে মামলা চলছে। বাচ্চু মিয়ারা প্রায় সময় আমাদের উপরে হামলা চালাতো। এরই ধারাবাহিকতায় আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করেছে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সাইদ আল মনসুর ইনাম জানান, শনিবার বিকেলে নুরুল আলমকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন তার অবস্থা খারাপ ছিলো। তার পায়ের তালু, হাতের তালুকে মারাত্মক জখম পাওয়া গেছে। সমস্ত শরীরে রক্তাক্ত জখম পাওয়া গেছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন ও পাওয়া যায়। রবিবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই ব্যাপারে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও আত্মগোপনে থাকায় তাদের কারো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
