যুবলীগ কর্মী জিলানী হত্যা; বাদীর বাড়ি ঘিরে রাখার অভিযোগ

 

আমোদ রিপোর্টার।।

কুমিল্লার যুবলীগ কর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরী ওরফে গোলাম জিলানী হত্যা মামলার বাদীর বাড়ি আসামি পক্ষের লোকজন ঘিরে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আসামিদের লোকজনের ভয়ে আলোচিত এই হত্যা মামলার বাদী ও নিহত জিল্লুর রহমানের ছোট ভাই ইমরান হোসেন চৌধুরী বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেলে এসব কথা জানান নিহত জিল্লুর রহমানের চাচাতো ভাই চৌয়ারা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা অহিদুর রহমান।

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ১১ নভেম্বর নগরীর চৌয়ারায় যুবলীগ কর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। ঘটনার পরদিন তাঁর ভাই ইমরান হোসেন চৌধুরী সদর দক্ষিণ থানায় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সোমবার বিকেলে অহিদুর রহমান বলেন, জিল্লুর হত্যা মামলার বাদী ইমরান হোসেন চৌধুরীর চৌয়ারা বাজারে বিকাশের দোকান রয়েছে। সে নগরীর হাউজিং এলাকার বাড়িতে থাকে। সোমবার সকাল থেকে তার বাড়ি ঘিরে রেখেছে ঘটনার মূলহোতাদের লোকজন। তারা ইমরানের বাড়ির চারপাশে মামলা প্রত্যাহার চেয়ে পোস্টারও লাগিয়েছে বলে জেনেছি। আর একটু পর পরই মোটরসাইকেল দিয়ে মহড়া দিচ্ছে ওই লোকেরা। তাদের ভয়ে বাদী ইমরান হোসেন বাড়ি থেকেও বের হতে পারছে না। তার দোকানও সারাদিন বন্ধ ছিলো।

অহিদুর রহমান আরও বলেন, আসামিদের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বারবার তার মোবাইলে কল দিয়ে তাকে হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে সে মোবাইলফোনও বন্ধ রেখেছে। গত দুই দিন ধরে ঘটনার মূলহোতাদের লোকজনরা চৌয়ারা বাজারে একের পর এক মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে আতঙ্ক তৈরি করছে। তাদের ভয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আমি নিজেও এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। তাদের কাছে কেউ-ই নিরাপদ নয়।
সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব বিষয়ে জানতে মামলার বাদী ও নিহত জিল্লুর রহমানের ছোট ভাই ইমরান হোসেন চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এদিকে আলোচিত এই হত্যাকাÐেও ২০ দিন পূর্ণ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। তবে এ মামলার আসামিরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এছাড়া ঘটনার মূলহোতারাও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। শুধুমাত্র হত্যাকাÐের দিন আবদুল কাদের নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। মামলার ৯ নম্বর আসামি কাদেরকে সম্প্রতি ৫ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে আলোচিত এই মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

অহিদুর রহমান বলেন, ঘটনার ২০ দিন হলেও আসামিরা অধরাই রয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান কোন তৎপরতা চালায়নি পুলিশ। আমরা এসব ঘটনায় খুবই হতাশ। উল্টো আসামিদের ভয়ে আতংকে আছে নিহতের পরিবার। আর আসামিরা রাজনীতিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের বাঁচানোর জন্য জোরচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে কোন পদক্ষেপই নিচ্ছে না।

সোমবার সন্ধ্যায় এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, আসামিদের লোকজন বাদীর বাড়ি ঘিরে রাখার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এছাড়া বাদী নিজেও আমাদেরকে বিষয়টি জানায়নি। আপনারা তাঁকে ৯৯৯ অথবা আমাদেরকে জানাতে বলুন। তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।