লকডাউনের বাগানে লাখ টাকার মাল্টা

আমোদ প্রতিবেদক।।
সময়টা ২০২০ সালের এপ্রিল মাস। করোনার কারণে দেশব্যাপী লকডাউন শুরুর সয়মটায় সবাই যখন আতঙ্কগ্রস্থ ঠিক তখন নতুন করে মাটি ভরাট করা এক বিঘা জমিতে মাল্টা বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পূর্ণমতি গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মো. আশিকুর রাহমান দিপু। 

 

উপজেলা পরিষদে এসে উপজেলা কৃষি অফিস খোলা পেয়ে ডুকে যাই অফিসে। কর্মকর্তাদের জানাই আমার মাল্টা বাগান করার আগ্রহের কথা। চারার ব্যবস্থাও হয়ে যায় সরকারিভাবে। শাসনগাছা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে “বছরব্যাপি ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন” প্রকল্পের আওতায় দেয়া হয় বারি মাল্টা-১ এর চারা, সার, প্রুনিং শেয়ার সহ নানা উপকরণ। ২৩ এপ্রিল, চারদিকের থমথমে পরিস্থিতিতে যখন বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিষেধ, তখন বাগানে চারা রোপণ করি। স্মৃতিচারণ করছিলেন দিপু।

 

দিপুর মাল্টা বাগানের বয়স এখন ২ বছর ৪ মাস। সোমবার বাগান ঘুরে দেখা গেল, ৬৫ টি গাছে মাল্টা ধরেছে। গাছ গুলোতে মাল্টার পরিমাণ আনুমানিক ১০ থেকে ২০ কেজি করে। কোনটাতে আবার ৫ কেজি। গড়ে ১৫ কেজি হিসাবে প্রায় ১ টন মাল্টা পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন দিপু। আয় হতে পারে আনুমানিক ১ লক্ষ টাকা। বাগান থেকে ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি করছেন মাল্টা।
দিপু আরো জানান, বাগান তৈরির চারা জোগাড় থেকে শুরু করে রোপণ, সার ব্যবস্থাপনা, প্রথম বছর সাথী ফলস হিসাবে ব্রোকলি, টমেটো, কুমড়া চাষ, অংগ ছাটাই, রোগ পোকা দমনে ব্যবস্থাপনা সফল পরামর্শ পেয়েছি অতিরিক্ত কৃষি অফিসার বানিন রায় স্যারের কাছ থেকে। আর উপসহকারি কৃষি অফিসার নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। কিছুদিন আগে উপজেলার ফল মেলায় মাল্টা প্রদর্শন করেছি। বুড়িচং এর বাসিন্দাদের নিজেদের মাল্টা খাওয়াতে পারবো, এটাই তৃপ্তি।

 

অতিরিক্ত কৃষি অফিসার বানিন রায় জানান, বুড়িচং উপজেলার উঁচু জমি গুলোতে ফল বাগান করার প্রবণতা কম ছিল। এখন প্রেক্ষপট পরিবর্তন হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা কুল, মাল্টা, ড্রাগন, পেঁপে ও কলা চাষে সফলতা পেয়েছে। কুমিল্লা শহরে ভালো বাজার থাকায় এ এলাকায় সকল ফল চাষ লাভজনক। তবে অবশ্যই উপজেলা কৃষি অফিস বা উপসহকারি কৃষি অফিসারদের পরামর্শ নিয়ে বাগান সৃজন করতে হবে। আমরা চাই দিপুর মতো আগ্রহী তরুণেরা সফল কৃষি উদ্যোক্তায় পরিণত হোক।