লাকসামে অর্থের বিনিময়ে ৪৮জনকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ

 

মহিউদ্দিন মোল্লা ।।

কুমিল্লার লাকসামে ৪৮জন অমুক্তিযোদ্ধাকে অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ৩০জন মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত পত্র মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

সূত্রমতে,কিছু অমুক্তিযোদ্ধা সন্তানের চাকুরি, বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি, চিকিৎসা ভাতা, দুই বছর চাকরি বৃদ্ধিসহ ইত্যাদি সুবিধা নিতে টাকা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন।

উপজেলার সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার সফিকুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি উপজেলা মিলনায়তনে যাচাই বাছাই করে। তখন কমিটির সদস্য সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আমিন উল্লাহ ২০২১ সালের কমিটিতেও রয়েছেন। উক্ত ব্যক্তি ২০১৭ সালে ৪৮ জনকে না বলে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। একই ব্যক্তি গত ৩০জানুয়াারি তাদের ‘হ্যাঁ’ বলে প্রতিবেদন প্রদান করেন।

সাবেক উপজেলা কমান্ডার আবদুল বারী মজুমদার বলেন,বর্তমান যাচাই বাছাইয়ে সভাপতি ছিলেন মনোহর আলী তোতা,সদস্য আবুল হোসেন ননী ও আমিন উল্লাহ। সদস্য সচিব ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। গেজেট ভুক্ত একজন অমুক্তিযোদ্ধাকে প্রশ্ন করলেন কমিটির সদস্য। আপনি কোথায় এবং কি কি অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছেন? তিনি জবাব দেন ভারতের শ্রীনগরে। থ্রি নট থ্রি এবং গ্রেনেড। ইউএনও সাহেব বললেন, কতদিন প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি উত্তরে বললেন- সাত মাস। তিনি বাংলাদেশেও প্রবেশ করেননি, অথচ এখন তিনি মুক্তিযোদ্ধা। বেশিরভাগ অমুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ স্থান বলেছিল কাঁঠালিয়া। কিন্তু কাঁঠালিয়া কোন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পেই ছিলনা।

মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার ওরফে পিস্তল বাশার বলেন,অমুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কোন আপোস করব না। আমার দাবি মিথ্যা হলে যে কোন সাজা ভোগ করবো।

যাছাই কমিটির সদস্য আমিন উল্লাহ বলেন, ৪৮জন ২০১৭সালের বাছাইয়ে উপস্থিত ছিলেন না। তাই না বলে প্রতিবেদন দিয়েছি। এবার তারা উপস্থিত ছিলেন। কমিটির অন্য সদস্যরা তাদের শনাক্ত করেছে। সেখানে আমার ‘না’ বলার সুযোগ ছিলো না।

যাছাই কমিটির সভাপতি মনোহর আলী তোতা বলেন,তাদের অভিযোগ সত্য নয়। কেউ টাকা নেয়ার প্রমাণ দিতে পারলে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেবো না। যারা অভিযোগ করছে তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়।

যাছাই কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একে এম সাইফুল আলম বলেন,মুক্তিযাদ্ধা নেতারা অন্যদের শনাক্ত করেছেন। সেখানে প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি উপস্থিত ছিলেন। ৪৮জনের নাম এখনও চূড়ান্ত তালিকায় আসেননি। তাদের নাম জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে(জামুকা) পাঠানো হয়েছে। সেটি তারা আবার যাছাই করবে। অভিযোগকারীরা এবিষয়ে জামুকায় অভিযোগ দিতে পারেন।