শিক্ষাবোর্ড ও মাউশির নির্দেশ অমান্যকারী স্কুল সভাপতি!
অফিস রিপোর্টার।।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে বার বার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশ অমান্যকারী অভিযুক্ত মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীরকে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি প্রস্তাব করে অনুমোদনের জন্য কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে বিধি লঙ্ঘন করে গঠিত এই কমিটি বাতিলের জন্য গত ১২ জুলাই কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে লিখিত আবেদন করেছেন বিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক এডহক কমিটির সদস্য গোলাম সারওয়ার। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন- বিধি মোতাবেক বিগত এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন পূর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসার ২৬ দিন পূর্বে নির্বাচন করেছেন, যা প্রবিধানমালার লঙ্ঘন। এর আগে দুইবার তার সভাপতিত্বে গঠিত কমিটি বোর্ড কর্তৃক বাতিল করা হয়। তিনি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীর গত ৪বছরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষাবোর্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা পরিচালনা করে বিদ্যালয়ের ৩লক্ষ ৭৯ হাজার ৫শ ৫৫ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা নানামুখী হয়রানির শিকার হন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় এই কমিটি অনুমোদন না দেয়ার জন্য বোর্ডে আবেদন দিয়েছি।
শিক্ষাবোর্ড, বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীর প্রথমবার সভাপতি হয়ে
২০১৭ সালে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ৮৪জন শিক্ষার্থীকে অবৈধ উপায়ে আর্থিকভাবে লাভবানের আশায় এসএসসি-২০১৮ পরীক্ষার ফরম পূরণের অপচেষ্টা করেন। সেই সময়ে শিক্ষাবোর্ডের হস্তক্ষেপে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ওই ঘটনায় সভাপতি ক্ষুব্ধ হয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ মো: মনিরুল ইসলাম সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কমিটি বাতিল করে শিক্ষাবোর্ড। এরপর ২০১৯ সালের মার্চে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এডহক কমিটির তত্বাবধানে ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন হয়। এসময় দ্বিতীয়বার সভাপতি হন মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীর। সভাপতি হয়ে তিনি প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে বাধা দেন। মাউশি ও শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা বারবার অমান্য করে প্রধান শিক্ষককে কাজে যোগদান করতে না দেয়া ও বেতন ভাতাদি পরিশোধ না করায় ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি সেই কমিটিও বাতিল করে দেন শিক্ষাবোর্ড। এরপর ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সামছুল আলমকে সভাপতি ও অভিভাবক সদস্য গোলাম সারোয়ারকে সদস্য করে এডহক কমিটি অনুমোদন দেন শিক্ষাবোর্ড। এদিকে গত ২৬ মে প্রিজাইডিং অফিসারের কক্ষে উপস্থিত হয়ে নির্বাচিত সদস্যরা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে অভিযুক্ত মিয়া মোঃ জাহাঙ্গীরকে মনোনীত করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মনিরুল ইসলাম সরকার বলেন, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের পর সকল প্রক্রিয়া শেষে সেটি অনুমোদনের জন্য বোর্ডে প্রেরণ করেছি। বোর্ড এখনও কমিটি অনুমোদন করেনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থ্াপনা কমিটির প্রস্তাবিত সভাপতি মিয়া মো: জাহাঙ্গীর বলেন,আমি নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছেন। তারা একাধিক অভিযোগ দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। এগুলো সঠিক নয়।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবদুস ছালাম বলেন-তার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে। এই ফাইলটি আইন শাখায় আছে। তারা দেখে আমাকে জানানোর পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।