শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবীতে কুমিল্লায় ইশা ছাত্র আন্দোলনের মানববন্ধন

 

 মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। লাগাতার ৪৪৭ দিন ধরে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। মাঝখানে কিছুদিন কওমি মাদরাসা চালু থাকলেও গত এপ্রিল থেকে আবারো তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আলিয়া মাদরাসাও খোলেনি গত ১৪ মাসে। স্কুল, কলেজ ও আলিয়া মাদরাসার সকল ধরনের পরীক্ষা বন্ধ। গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেয়া হয়েছে। এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এখনো হয়নি। পরীক্ষা কবে হবে তাও স্পষ্ট নয়। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে এবারও অটো পাসের অপেক্ষায়। 
ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বিপুল অংশ অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন গেমসে আসক্ত হয়ে গেছে। এর বাইরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে আর্থিক বিপর্যয়ে লাখ লাখ পরিবার পথে বসেছে। সরকারের উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা ও খামখেয়ালীতে দেশের শিক্ষাখাত আজ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এদিকে সরকারের কোনো নজর নেই। সরকার চাচ্ছে সবাইকে ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সহসাই সবাই ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে, এমন আশা করা যায় না। সুতরাং আর সময় না বাড়িয়ে অতিদ্রুত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন। এজন্য যা যা করণীয় তাই করুন। অন্যথায় সরকারের অদূরদর্শী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক এবং ভুক্তভোগী সকলকে নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর পীর সাহেব চরমোনাইর নেতৃত্বে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো। যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত পূর্বক অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবীতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নগর সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ উপরোক্ত কথা বলেন।
নগর সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম সবুজের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, মহানগর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি এম এম বিলাল হুসাইন, জেলা সভাপতি মাওলানা মো: তৈয়্যব, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা নুর হুসাইন, মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, যুবনেতা মাওলানা নাজির আহমাদ ফাহিম, মাওলনা আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, ডা: এস এম আতিকুল ইসলাম, ইশা ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা সহসভাপতি মাহদী হাসান, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ ইসলাম, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান, মহানগর দাওয়াহ ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মামুন বিন নুরুল ইসলাম, জেলা দাওয়াহ ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক হোসাইন আহমাদ, মহানগর তথ্য গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক এইচ. এম. এনামুল হক, জেলা তথ্য গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক জোবায়ের আবেদীন, প্রকাশনা ও দফতর সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, মহানগর অর্থ ও কল্যাণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়াজী, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক নাজমুস সাকিব, ক্বওমী মাদরাসা সম্পাদক ওসামা বিন তৈয়্যব মুজাহিদ, আলীয়া মাদ্রাসা সম্পাদক জোবায়ের হুসাইন, স্কুল ও কলেজ সম্পাদক আবু সুফিয়ান শরীফ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক ইফতেখার ফারদিন, মহানগর কার্যনির্বাহী সদস্য মোশারফ হুসাইন ও আনোয়ার হুসাইন সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকাল সারে এগারোটার সময় সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালায়ের ই-শাখার কর্মকর্তারা স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। স্মারকলিপিতে সংগঠনটি সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ৫দফা দাবী পেশ করেন।
১. অগ্রধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করে অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনতে ব্যাপকহারে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের শিক্ষামুখী করতে সরকারিভাবে “এসো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাই” নামে কর্মসূচি পালন করতে হবে।
৪. চলমান বাজেটে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. চলমান বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।  

—  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি