সেচের আওতায় ২২ হাজার হেক্টর জমি, সোয়া লক্ষ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি

(প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম।)

inside post

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা- চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ২২ হাজার ২৭১ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। এতে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মূল্য প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। খাল পুনঃখননে জলাবদ্ধ পতিত ও এক ফসলি জমি এখন ২-৩ ফসলি জমিতে রুপান্তরিত হয়েছে। ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩৪ টি উপজেলায় ৫ বছর ব্যাপী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প এলাকার মোট আয়তন ৬৬২ হাজার হেক্টর। সেখানে আবাদি জমির পরিমাণ ৪২৬ হাজার হেক্টর। প্রকল্পের শুরুতে সেচের আওতায় জমি ছিল ৩০০ হাজার হেক্টর, তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১০ হাজার হেক্টর । বিভিন্ন আকারের সেচ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ফসলের মাঠের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, কৃষিপণ্য ও কৃষি যন্ত্রপাতি এবং গবাদি পশুসহ স্থানীয় জনসাধারণের পারাপারের সুবিধা সৃষ্টি হয়েছে।

( কৃষি কর্মকর্তাদের পয়াতের জলার মাঠ পরিদর্শন। ফাইল ছবি।)

শুক্রবার ‘আধুনিক সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধিতে কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প: প্রভাব,চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
কুমিল্লার বিএডিসি সেচ কমপ্লেক্সের সেমিনার হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএডিসি’র চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব সাবিহা পারভীন, পরিকল্পনা কমিশনের সেচ অনুবিভাগের যুগ্ম প্রধান মোহাম্মদ এনামূল হক এবং বিএডিসি’র সদস্য পরিচালক (ক্ষুদ্রসেচ) প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএডিসির প্রধান প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ্। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, কুমিল্লা (ক্ষুদ্রসেচ) সার্কেল ও কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ) ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।

 

(সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, কুমিল্লা (ক্ষুদ্রসেচ) সার্কেল ও কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।)

উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পয়াতের জলার খাল খননে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এভাবে পাহাড়পুর এলাকার পাগলী খাল খননের আবেদন জানান কৃষকরা।
প্রধান অতিথি কৃষি সচিব মো.সায়েদুল ইসলাম বলেছেন, কুমিল্লা- চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ২২ হাজার ২৭১ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। এতে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তা আশাব্যঞ্জক। তিনি আরো বলেন, দেশে সারের কোন সংকট নেই। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র দেশে সার সংকট রয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে বর্তমানেও দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি সার মজুদ রয়েছে। আমি দেশের প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে নির্দেশ দিয়েছি- কৃষকরা তাঁদের সুবিধামতো যখন ইচ্ছে তখন এসে সার কিনবেন। এরপরও কেউ সার নিয়ে কারসাজি করলে কাউকে ছাড়া দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

আরো পড়ুন