সেচ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননের গুরুত্ব অপরিসীম: কৃষিমন্ত্রী

অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সেচ কমপ্লেক্স, বিএডিসি, কুমিল্লায় ‘ফলদ বাগান, সৌরশক্তি চালিত ডাগওয়েল ও ড্রিপ সেচ পদ্ধতির প্রদর্শনী প্লট’ এর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি । রবিবার কৃষিমন্ত্রী সেচ কমপ্লেক্সে কাজু বাদামের চারা রোপন করেন এবং বঙ্গবন্ধু কর্নারে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান।
বৃক্ষরোপণ শেষে কৃষি মন্ত্রী বলেন- সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমিয়ে ভূ-উপরিস্থ পনির সর্বোত্তম ব্যবহারের উপায় হচ্ছে খাল ও নদী খনন। সেচ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননের গুরুত্ব অপরিসীম। নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় পানির প্রবাহ কমে গেছে, অনেক খাল দীর্ঘদিন ধরে পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। খাল এবং নদীগুলো পুনঃখনন করে দিলে দুই দিক থেকে আমাদের কৃষকরা লাভবান হতে পারবে। এই খাল খননের ফলে এক দিকে যেমন জলাবদ্ধতা নিরসনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পতিত জলাবদ্ধ জমিগুলো চাষের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। অপরদিকে শুকনো মৌসুমে খালের জমাটবদ্ধ পানি সেচ কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এ কাজটিই দক্ষতার সাথে করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর সেচ বিভাগ। বিএডিসি’র কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তিন জেলায় প্রায় ৪০০ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। যেটি কুমিল্লা অঞ্চলের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ অঞ্চলে আরো প্রায় ১০০০ কিলোমিটার খাল খননের চাহিদা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সেই লক্ষ্যে এ অঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে আরো বৃহৎ পরিসরে প্রকল্প গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
কুমিল্লা (ক্ষুদ্রসেচ) সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ‘দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী রাখা যাবে না’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেচ কমপ্লেক্সের পতিত জমিতে প্লট আকারে ফলদ বাগান এবং সবজি চাষ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ডাগওয়েল স্থাপন এবং পানি সাশ্রয়ী আধুনিক স্প্রিংকলার ও ড্রিপ সেচ পদ্ধতির প্রয়োগের মাধ্যমে এসব ফলদ বাগান এবং সবজি চাষের প্লটে সেচ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব বাগানে আম, ভিয়েতনামি কাঁঠাল, ডুরিয়ান, ডুমুর, করমচা, বিলিম্বি, সফেদা, শরিফা, পেয়ারা, কমলা, বড়ই, বেল, আমড়া, আমলকি, হরিতকি, লেবু, ড্রাগন, লটকন, তেঁতুল এবং মাল্টার বিভিন্ন প্রজাতির মোট ৮০ টি ফলজ গাছ রয়েছে।
ড্রিপ সেচ পদ্ধতি সম্বন্ধে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আগামীর মিঠা পানির সংকট মোকাবেলায় এ সেচ পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি যেখানে বদ্ধ প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে সুষমভাবে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে গাছের শিকড়ে সরাসরি পানি পৌঁছে দেওয়া হয়। এতে ৩০-৭০% পানি ও প্রায় ৫০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়।
এসময় কৃষি সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম, বিএডিসি’র চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।