স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৩৫ লাখ টাকা লুট,দুই সপ্তাহেও মামলা নেয়নি পুলিশ
প্রতিনিধি।
কুমিল্লার চান্দিনা বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহাদেব চন্দ্র দেবনাথ গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাঁতী বাজার থেকে স্বর্ণ বিক্রি করে সন্ধ্যায় সায়েদাবাদ জনপথ মোড় থেকে বাসে উঠেন। তাদের বহনকারী বাসটি সন্ধ্যা পৌঁনে ৭টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানাধীন বাউশিয়া এলাকায় পৌঁছলে বাসের গতিরোধ করে একটি মাইক্রোবাস। এসময় ঢাকা মেট্রো-চ-১৯-৮৩৫৬ নম্বরের সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস থেকে নেমে গায়ে ডিবি পুলিশের পোশাক, হাতে ওয়াকিটকি নিয়ে বাসে উঠেন ৮-১০জন। বাসে উঠে প্রথমেই চালক ও হেলপারকে ধমক দেন। তাদের টার্গেট ব্যবসায়ী মহাদেব চন্দ্র দেবনাথ ও তার সঙ্গে থাকা কর্মচারী টুটুল সরকারকে। তারা দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাস থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলেন। মাইক্রোবাসটি দাউদকান্দির গোমতী সেতু অতিক্রম করে দাউদকান্দি উপজেলার শহীদ নগর এলাকার নির্জন স্থানে নামিয়ে দেওয়া হয় কর্মচারী টুটুল সরকারকে। সামনে ইউটার্ন নিয়ে আবারও ঢাকামুখী হয় মাইক্রোবাসটি। দাউদকান্দি টোল প্লাজা অতিক্রম করে ব্যবসায়ী মহাদেব চন্দ্র দেবনাথের চোখ বেঁধে সাথে থাকা নগদ ৩৫ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা লুটে নেয়। বাউশিয়ার ঘটনাস্থলের ঠিক বিপরীত পাশে মাইক্রোবাস থামিয়ে তাকে ফেলে দেওয়া হয়। একটি পেট্রোল পাম্পে গিয়ে জনৈক এক ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে রাতে চান্দিনায় ফিরেন তিনি। পরদিন দাউদকান্দি টোল প্লাজায় গিয়ে ওই মাইক্রোবাসের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।
ব্যবসায়ী মহাদেব চন্দ্র দেবনাথ জানান, আমরা ভিডিও ফুটেজসহ থানায় গিয়ে অভিযোগ করার পর আমাদেরকে সাথে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে দাউদকান্দি টোল প্লাজায় গিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখেন। এসময় গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোক্তার হোসেন এবং উপ-পরিদর্শক নূরুল হুদা আমাদেরকে বলেন, ‘ঘটনার ক্লু পাওয়া গেছে, আমরা আরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব। আপনারা এখন চান্দিনায় চলে যান, খবর দিলে আসবেন।’
পরদিন ৩ নভেম্বর যাওয়ার পর ‘কাল’ আসবেন। ৪ নভেম্বর গেলে আবার একই বক্তব্য। ৫ নভেম্বর গেলে ওসি’র ভিন্ন বক্তব্য। ক্ষুব্ধ হয়ে খোদ ব্যবসায়ীকেই দোষারূপ করে বলেন, ‘তোরা নিজেরাই আত্মসাৎ করে অভিনয় করছিস, যা এখানে থেকে….!’ এমন দুব্যর্বহারে নিরূপায় হয়ে থানা থেকে ফিরে আসেন ওই ব্যবসায়ী।
এদিকে, ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পরও আইনি কোন সহায়তা না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোক্তার হোসেন জানান, ঘটনাটি তদন্ত করেছি। মাইক্রোবাসের মালিক চিহ্নিত করেছি। ওই মাইক্রোবাসের মালিক পক্ষ ভাল মানুষ। ঘটনার সাথে কর্মচারীর কোন যোগসাজস আছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।
এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোল্লা সোহেব আলীর বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি জানান, ঘটনাস্থল আমার এলাকায় না। ভুক্তভোগীরা সুনির্দিষ্টভাবে ঘটনাস্থল দেখাতে পারে না। তাই মামলা নেওয়া হয়নি।