হাজীপুর গ্রামের ৮৫ ভাগ নলকূপের পানিতে আর্সেনিক
আমোদ প্রতিনিধি:
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের ৮৫ শতাংশ নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। লালমাই উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের আওতায় চলমান আর্সেনিক পরীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
গ্রামবাসী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাজীপুর গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার মানুষের খাওয়ার পানির চাহিদা মিটাতে রয়েছে প্রায় আড়াইশ অগভীর নলকূপ। গত ১৭ জুন, ১৮ জুন ও ২১ জুন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নিয়োজিত টেস্টার রাসেল, তানভীর, সজিব ও ফাতেমা ওই গ্রামের ১শ ৯২টি নলকূপের পানি আর্সেনিক পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় দেখা যায়, ১শ ৬৪টি নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে। পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটারে ৫০ পিপিবি হলেও হাজীপুর গ্রামের ১৭টি নলকূপের পানিতে ১০০০ পিপিবি, ৫২টি নলকূপের পানিতে ৫০০ পিপিবি, ৪২টি নলকূপের পানিতে ৩০০ পিপিবি, ১৮টি নলকূপের পানিতে ২০০ পিপিবি ও ৩৫টি নলকূপের পানিতে ১০০ পিপিবি মাত্রার আর্সেনিক রয়েছে।
রাসেল আহমেদ ও তানভীর জানান, হাজীপুরের ৮৫ভাগ নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে। ব্যক্তিগত ছাড়াও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার দেওয়া নলকূপের পানিতেও আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। যেসব নলকূপের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া যাচ্ছে সেসব নলকূপের মুখে লাল রং করে দিচ্ছি।
এক হাজার পিপিবি মাত্রার আর্সেনিক পাওয়া নলকূপের মালিক আবুল কাশেম ও আবুল হাসেম বলেন, জেনে শুনেই আর্সেনিকের মতো বিষ নিয়মিত পান করছি। যতদ্রুত সম্ভব আমাদেরকে গভীর নলকূপ স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার সুযোগ করে দিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লালমাই উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, বাকই উত্তরের হাজীপুর গ্রামের ৮৫ ভাগ নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। যতদূর জেনেছি, ওই গ্রামের নলকূপগুলো ৬০ থেকে ৭০ ফুট গভীরে স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সরকারের গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পে হাজীপুর গ্রামকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
লালমাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রওনক জাহান বলেন, বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন স্যারকে অবহিত করেছি। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছি। হাজীপুরবাসীকে বলবো-রেড মার্ক করা নলকূপের পানি পান করবেন না।
জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উল্যাহ বলেন, চলমান জরিপ কার্যক্রম শেষ হলে যে গ্রামে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি দেখবো, সে গ্রামে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারিভাবে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হবে।