সন্তানের স্বীকৃতি দাবি জেলা আ’লীগ নেত্রীর

 প্রতিনিধি।।
কুমিল্লায় স্ত্রীর মর্যাদা, সন্তানের স্বীকৃতি ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন  কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিশাত খান।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার স্বামী মোঃ মিনহাজুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত আকারে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,
২০১১ সালে তার স্বামী মিনহাজুর রহমান ইটালি থাকা অবস্থায় তার ভাগ্নে অ্যাডভোকেট শহীদুল হক স্বপনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। ২০১৩ সালে সে দেশে এসে নিশতকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে মিনহাজের সাথে বিয়ের দিন ধার্য্য হয়। নগরীর নূরপুর হাউজিংয়ের বাসায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ের আগ মুহূর্তে সে কাবিন রেজিষ্ট্রি করতে পারবে না বলে জানায়। কারণ হিসেবে সে জানায়, তার প্রথম স্ত্রীর সাথে একটা মামলা চলমান আছে ওই মামলাটা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাবিন রেজিষ্ট্রি করা যাবে না। দুইমাসের মধ্যে মামলা শেষ হলে কাবিন রেজিষ্ট্রি করা হবে। ওই শর্তে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। ওই দিন থেকেই তিনি নূরপুর হাউজিংয়ের বাসায় বসবার শুরু করেন। বিয়ের ১৯ দিন পর মিনহাজ আবারো ইতালি চলে যান। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর মিনহাজ বাংলাদেশে আসে। পরদিন ৩০ ডিসেম্বর বাসার মধ্যে কাজী এনে বিভিন্ন কাগজে ওই নারীর স্বাক্ষর নেয় এবং বিয়ে রেজিষ্ট্রার করা হয়েছে বলে মিনহাজ জানায়।
বিয়ের আগে মিনহাজের বিরুদ্ধে ইটালিতে একটি জাল- জালিয়াতি ও মানব পাচার মামলা হয় যা নিশাত জানতো না। বিয়ের পর মিনহাজ ইটালি থেকে ইংল্যান্ডে চলে যান বলেন যে ওখানে যেয়ে নতুন ব্যবসা করবে। লন্ডনে ব্যবসার কথা বলায় নিশাতের ঠিকাদারি ব্যবসার সমস্ত টাকা এবং বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে নেয় মিনহাজ। কুমিল্লার বাড়ি ঢাকার ফ্লাট মিনহাজ ও নিশাত খান স্ত্রী হিসেবে যৌথ স্বাক্ষরে বন্ধক ও ভাড়া প্রদান করে মিনহাজ টাকা নেয়।
এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে নিশাতকে টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দিতো মিনহাজ। এরই মাঝে ইটালি আওয়ামীলীগের একজন নেতার মাধ্যমে জানতে পারেন মিনহাজের ৮ বছর ৯ মাসের সাজা হয় এবং ৫ লক্ষ পাঁচশত চুয়ান্ন হাজার ইউরো জরিমানা হয় ইটালির আদালতে।
এদিকে মিনহাজ নিশাতকে বলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ৬-৭ কোটি টাকা লোন নিতে অথবা অন্য কোন ব্যাংকে চেষ্টা করতে। এরই মাঝে মিনহাজের প্রথম স্ত্রী উম্মে সালমা নিশাতের সাথে যোগাযোগ করে মিনহাজ সম্পের্কে সব কিছু অবগত করে। সালমার নামে এবং সালমার ভাইয়ের নামে লোন করে মিনহাজ অনেক টাকা নিয়ে গেছে কিন্তু অদ্যবদি সে লোনের টাকা পরিশোধ করেনি।
এইসব তথ্য জানার পর নিশাত মিনহাজের ফাঁদে পা না দিয়ে এবং ধার নেয়া টাকা ফেরৎ চায়। এতে কাল হয়ে দাঁড়ায় নিশাতের। বিভিন্নভাবে হয়রানি শুরু করে। নিশাতের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এরই মাঝে তাদের কোল জুড়ে আসে একমাত্র পুত্র মিনশাত রহমান স্বাধীন, যার বয়স এখন ৪ বছর ২ মাস। সে সন্তান বর্তমানে হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত।
সম্প্রতি টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন মিডিয়ার অপ্রপ্রচার চালাচ্ছে সে নাকি তার স্ত্রী না। নিশাত বলেন, স্ত্রী না হলে ৮টি বছর তার সাথে কিভাবে সংসার করলো। পাসপোর্টসহ সকল কাগজে কিভাবে নিশাতের নাম আসলো। ৮ বছর তার বাড়িতে কিভাবে বসবাস করছে। নিশাত প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানান, তার সন্তানটিকে বাঁচাতে, তাকে বাঁচাতে, তার স্ত্রীর মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে। মিনহাজ যে কোন সময় তাকে হত্যা করতে পারে। তিনি নিজের ও সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা দাবি করেন।