৩৬প্রকার ফল ফসলে রঙিন ১২শতক জমি

বছরে আয় ৬লাখ টাকা

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া। সেখানে ১২শতক জমিতে ৩৬প্রকারের বেশি সবজি,ফল ও ফুলের চাষ হয়েছে। উদ্যোক্তা ফেরদৌসুল আলম পরিবারে বিষমুক্ত খাদ্যের যোগানের সাথে বছরে আয় করেন প্রায় ৬লাখ টাকা।


সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া। সেখানে সালাফি মাদ্রাসার পেছনে ১২শতক জমিতে ৩৬প্রকারের বেশি সবজি,ফল ও ফুলের চাষ করা হয়েছে। কোন বেডে ড্রাগন,কোনটিতে ডাটা,লাল শাক,মুলা,পালংক শাক,কলমি শাক। পাশে রয়েছে লাউ,কুমড়া। জমির বেড়ায় ঝুলছে বরবটি। রয়েছে কলা,পেঁপে,লেবু ও শরিফা। ফুলের মধ্যে রয়েছে গোলাপ,গন্ধরাজ,গাদা। কোন বেডে ড্র্াগনের গোড়ায় ডাটা শাকের চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন করা হচ্ছে জৈব সার। চলছে চারা উৎপাদনও। ঝুলন্ত পদ্ধতিতে দেয়া হচ্ছে সেচ। উদ্যোক্তা সবজি বেডে নিড়ানি দিচ্ছেন। ড্রাগনের বেডে সেচ দিচ্ছেন তার সহকারী।
উদ্যোক্তা ফেরদৌসুল আলম বলেন,উপজেলা সদরে বইয়ের ব্যবসা ছিলো। মাঝে খুব মুটিয়ে যান। বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করান। চিকিৎসক পরামর্শ দেন শারিরীক পরিশ্রম করতে। তারপর নেমে পড়েন। প্রথম প্রথম খুব ভালো ফলন হতো না। ইউটিউব দেখে,মানুষের পরামর্শ ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে ভালো ফলন পেতে শুরু করেন। বাগানের বয়স চার বছর। পরিবারের প্রয়োজনীয় নিরাপদ সবজি ও ফল এখান থেকে পাচ্ছেন, বিক্রির পাশে দরিদ্রদের মাঝেও বিতরণ করছেন।


তিনি আরো বলেন,প্রথমে চাষ শুরু করায় প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা নানা কথা বলতেন। ড্রাগনের চাষ দেখে বলেন-এগুলো কি মানুষ খায়? এখন সন্তানরা ড্রাগন পাকার অপেক্ষায় থাকে। বাজারে ফল ফসল নিতে হয় না,নিরাপদ হওয়ায় ক্রেতারা অগ্রিম বুকিং দিয়ে জমি থেকে নিয়ে যায়। আগামীতে আরো ৩৬শতক জমিতে কলা ও মিষ্টি আলুর চাষ করবেন। মনোযোগ দিলে কৃষিতে সাফল্য আসবে বলেও তিনি জানান।
বাগানটি দেখতে এসেছেন হোমনা এটিআইএর শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদ,ইমতিয়াজ আহমেদ ও ওয়ালী উল্লাহ। তারা বলেন,আমরা বাগানটি দেখে অভিভূত। তিনি আধুনিক নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কম জায়গায় বেশি ফসল চাষ করেছেন। এই উদ্যোক্তার মতো বাগান করলেও অন্যরাও লাভবান হতে পারবেন।
স্থানীয় উপ-সহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ফেরদৌসুল আলম একজন উদ্যোমী উদ্যোক্তা। তাকে আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো তিনি এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখেননি। বিষমুক্ত উপায়ে ফসল উৎপাদন করছেন। তার সফলতা দেখে অন্য শিক্ষিত তরুণরাও কৃষিতে আগ্রহী হচ্ছেন। শিক্ষিত উদ্যোক্তা তৈরিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।