বন্ধ ১৩ রেল স্টেশন,কমেছে সাত জোড়া ট্রেন
অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লা অঞ্চলে গত এক যুগে ১৩টি রেল স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। স্টেশন গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া এগুলোর কোনটিতে ট্রেন থামে। তবে স্টেশন বন্ধ থাকায় বিনা টিকেটে যাত্রীরা ভ্রমণ করে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এদিকে দুই রুটে কমেছে সাত জোড়া ট্রেন। বেহাল অবস্থা লাকসাম-নোয়াখালী রেল সড়কের। এই রুটে মাত্র এক জোড়া ট্রেন চলে।
স্টেশন গুলো হচ্ছে, লাকসাম-নোয়াখালী রেল সড়কের দৌলতগঞ্জ,খিলা, বিপুলাসার,বজরা ও মাইজদী। লাকসাম-চট্টগ্রাম রেল সড়কের নাওটি। লাকসাম-আখাউড়া রেল সড়কের আলীশ্বর, ময়নামতি ও রাজাপুর। লাকসাম-চাঁদপুর রেল সড়কের শাহতলী, মৈশাদী, বলাখাল ও শাহরাস্তি। এছাড়া আরো ৫/৬টি স্টেশন বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বন্ধ স্টেশনের কয়েকটির প্লাটফর্মের মধ্যে এখন ধান মাড়াই ও গরু বাধা হচ্ছে। কোথাও রেল লাইনের ওপর বাজার বসছে। কোথাও রেলওয়ের সম্পত্তি দখল হয়ে যাচ্ছে। এদিকে লাকসাম-চাঁদপুর রেল সড়কে এক দশকে তিন জোড়া ট্রেন কমেছে। এখন দুই জোড়া ট্রেন চলে। সাগরিকা ও মেঘনা। লাকসাম-নোয়াখালী রেল সড়কের অবস্থা বেশি বেহাল। এই রুটে বেশি স্টেশন বন্ধ ও ট্রেন চলাচলও বন্ধের পথে। এই রুটে চার জোড়া ট্রেন বন্ধ হয়েছে। এক জোড়া ট্রেন চলে। শুধু উপকূল এক্সপ্রেস। ইঞ্জিন ও বগি সংকটে ট্রেন কমেছে। জনবল সংকটের কারণে অধিকাংশ রেল স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে বন্ধ আলীশ্বর, ময়নামতি স্টেশন পুন:সংস্কার করা হয়েছে। তবে এগুলো কবে চালু হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা রেল স্টেশন এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়- স্টেশনটি এক দশক ধরে বন্ধ। সেখানে স্টেশনের প্লাটফর্মে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মালামাল রেখেছেন। অন্যপাশে জুয়া খেলায় ব্যস্ত লোকজন। কোথাও গরু- ছাগল বাধা হচ্ছে। কোথাও ধান শুকানো হচ্ছে। লাকসামের দৌলতগঞ্জ রেল স্টেশনটির পাশের জায়গা দখল হয়ে গেছে।
আলীশ্বর স্টেশন সংলগ্ন বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা দীন মোহাম্মদ বলেন,যোগাযোগের সুবিধার জন্য স্টেশনের পাশে বাড়ি করেছিলাম। লম্বা হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন থামতো আর ছাড়তো। যাত্রী উঠানামায় এলাকা সরগরম হয়ে উঠতো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনটি বন্ধ।
শাহরাস্তির প্রবীণ গণমাধ্যম কর্মী হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া বলেন,শাহরাস্তি রেল স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন। এটিতে ট্রেন থামে। তবে স্টেশন বন্ধ। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
খিলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন,খিলা একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন। এটি বন্ধ থাকায় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
রেলওয়ে কুমিল্লার উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন,স্টেশন মাস্টার ও জনবল সংকটের কারণে স্টেশন গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। স্টেশন মাস্টার নিয়োগ হলে স্টেশন গুলো পুনরায় চালু হবে। এই সব বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।
এই অঞ্চলে ট্রেন পুনরায় বাড়ানো এবং বন্ধ স্টেশন চালুর বিষয়ে রেল চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক তারেক মোহাম্মদ শামস তুষার বলেন, এই সব সিদ্ধান্ত রেল ভবন নেয়। আমরা শুধু বাস্তবায়ন করি। এই বিষয়ে কোন ইতিবাচক তথ্যও তার কাছে নেই বলে জানান।