সাত লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কারসহ ব্যাগ ফিরিয়ে দিলেন কুমিল্লার মনির
আমোদ প্রতিনিধি।
দুবাই থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরে উড়োজাহাজ থেকে নেমে আসেন মনির আহমেদ। দেড় বছর আগে দুবাই গেছেন। ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছেন। তার বাড়ি কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া এলাকায়।
গেলো বৃহস্পতিবার দুবাই ফেরত মনির স্ক্যানিং মেশিনের সামনে গিয়ে দাড়ান। আনুষ্ঠানিকতা সেরে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি আসেন। গাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে বাসায় প্রবেশ করেন। বিমান বন্দর থেকে নিয়ে আসা হাতব্যাগটি খুলে দেখেন বেশ কয়েক ভরি স্বর্ণালঙ্কার। বিস্মিত মনির ব্যাগটি নেড়ে চেড়ে দেখেন একই ব্যাগ, তবে তার না। এবার পুরো ব্যাগটি খুলে দেখেন কোন ঠিকানা পাওয়া যায় কিনা।
ব্যাগটি তল্লাশি করে একটি বোডিং কার্ড, একটি স্বর্ণ ক্রয়ের রশিদ পান। পরে তিন দিনের প্রচেষ্টায় ব্যাগের প্রকৃত মালিককে খুঁজে পান।
রোববার কুমিল্লা প্রেসক্লাবে ব্যাগের মালিক মোঃ ওয়াসিমের হাতে স্বর্ণালঙ্কারসহ ব্যাগটি তুলে মনির হোসেন।
মনির হোসেন বলেন, আমি যখন এয়ারপোর্টে নেমে স্ক্যানিং মেশিনের আনুষ্ঠানিকতা সারি তখন আমার নিজের নিয়ে আসা হুবহু আরেকটি ব্যাগ নিজের মনে করে বাড়ি নিয়ে আসি। আমার নিজের ব্যাগটি এয়ারপোর্টে ফেলে আসি। তারপর টানা তিন দিন আমি বিভিন্নভাবে প্রকৃত মালিককে খোঁজার চেষ্টা করি। তার ব্যাগে রাখা বোডিং পাস ও একটি স্বর্ণক্রয়ের রশিদ পাই। সেখানে দুবাইয়ের একটি দোকানের নম্বর পাই। সেই নম্বরের সূত্র ধরে ব্যাগের মালিককে খুঁজে বের করি।
স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগটি অক্ষত পেয়ে আপ্লুত হয়ে যান মোঃ ওয়াসিম। দুবাইতে একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কর্মরত আছেন। কয়েক বছরের জমানো টাকা দিয়ে স্ত্রী মায়ের জন্য স্বর্ণালঙ্কার কিনে আনেন। ব্যাগ হারিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। মন খারাপ হয়েছিলো । তিনি জানান, তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানের শমসেরনগর এলাকায়। ব্যাগটি হারানোর পর তিনি শাহ আমানত বিমানবন্দরে বহু খোঁজ করেন।
ব্যাগ পেয়ে আনন্দিত ওয়াসিম বলেন, এত ভালো মানুষ পৃথিবীতে আছে জানতাম না। মনির ভাই ব্যাগ পেয়ে তিন দিন ধরে আমাকে খুঁজেছেন। আজ আমার জন্য চার ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করেছেন। আমি চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় গিয়ে দেখি মনির ভাই ব্যাগ নিয়ে বসে আছেন। আমি ব্যাগ হাতে নিয়ে দেখি স্বর্ণালঙ্কারসহ সব কিছু ঠিক আছে।