ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলার রায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার সিএনজিচালক সাইদুর হত্যা মামলার রায়ে রানা মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার (০৬ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. রানা মিয়া (২২) জেলার কসবা উপজেলা সদরের কাঞ্চনমুড়ি গ্রামের মো. দানু মিয়ার পুত্র। অপরদিকে হত্যার শিকার হওয়া অটোরিকশাচালক সাইদুর রহমান (১৯) একআ গ্রামের হুমায়ূন কবিরের পুত্র।
আদালত সূত্র ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলা সদরের কাঞ্চনমুড়ি গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাইদুর রহমান বিগত ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মাহফিলে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে ২ জানুয়ারি ওই গ্রামের মারকাজুল কোরআন ক্যাডেট মাদরাসার পরিত্যক্ত একটি বাথরুমের সেফটি ট্যাঙ্কির ভেতর থেকে সাইদুরের জবাই করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে একই গ্রামের রানা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত রানা ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। আদালতে প্রদত্ত জবানবন্দীতে রানা মিয়া জানায়, একটি মোবাইল ফোন নিয়ে বিরোধের জের ধরে সাইদুরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আদালত মামলাটির অধিকতর শুনানি শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামী রানা মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্তেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
আদালতের প্রদত্ত রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করে মামলার বাদী ও নিহতের মা হনুফা বেগম বলেন, ‘আমি আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি দ্রুত এই রায় বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্তিয় আইনজীবী অ্যাডভোকেট দ্বীন ইসলাম জানান, ‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হত্যা করে যে কেউ পার পায় না এটাই তার সর্বশেষ প্রমাণ।’ অন্যদিকে আসামী পক্ষের নিযুক্তিয় আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম জানান, ‘এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা এই হত্যাকান্ডের ঘটনার পেছনে পরিকল্পনাকারী হিসেবে শারমিন বেগম নামে এক মহিলাকে মামলায় অন্তর্ভুক্তের কথা বলেছিলাম, কিন্তু তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আসামী রানা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপীল করব।’