একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদের কথা

 

inside post

।। মোহাম্মদ এমদাদুল হক ।।

রাজনীতি কী, কাদের জন্য রাজনীতি বা কারা হবেন রাজনীতিবিদ- এ রকম প্রশ্ন মাঝেমধ্যে মনের ভেতর ঘুরপাক খেলেও এর সঠিক উত্তর খুঁজে পাই না। নিজের সাধারণ বিবেক যা বলে, বাস্তবে দেখতে পাই তার উল্টোটা। আমার স্বল্প জ্ঞানে এতটুকু বুঝতে পারি, রাজনীতি অর্থ সেবা দেওয়া এবং সেটা অবশ্যই জনগণের সেবা। মানুষের কল্যাণ ও অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করাই হলো রাজনীতি। আর একজন সত্যিকারের রাজনীতিবিদের কাছে রাজনীতি হবে একটি পেশা এবং সেবা দেওয়ার নেশা। তাদের মধ্যে থাকবে প্যাশন বা গভীর আবেগ। থাকবে দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা। একজন নেতার থাকবে নৈতিক মেরুদণ্ড এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা। তাকে হতে হবে সৎ, নির্লোভ ও আদর্শবান। তাকে শুধু ক্ষমতার জন্য বুভুক্ষু থাকলে হবে না।

কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদের মধ্যে সেসব গুণ প্রায় অনুপস্থিত। গণমানুষ নয়, শুধুই ব্যক্তিসর্বস্ব রাজনীতি। আদর্শের বালাই নেই। বিভিন্ন দলে কোন্দল, আদর্শবিচ্যুতি। এ কারণে রাজনীতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সবকিছুর নিয়ন্তা হলেও তা মানুষকে এখন আর সেভাবে স্পর্শ

( মোহাম্মদ এমদাদুল হক )

করছে না। এক দশক আগেও কোনো না কোনোভাবে রাজনীতি মানুষকে ভাবাতো। রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও আগের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মাঝে সৌজন্যবোধ, সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক সহানুভূতির ঘাটতি ছিল না। এখন সে জায়গাগুলো উধাও। তাই বর্তমান রাজনীতি নিয়ে মানুষ বীতশ্রদ্ধ। উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিতে আসতে চাইছে না। সেই জায়গাটা দখল করে নিচ্ছে স্বল্পশিক্ষিত দুর্বৃত্ত শ্রেণি ও টাকার কুমিররা।

তবে আশার কথা হলো এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে সৎ, আদর্শবান অনেক নেতা রয়েছেন, যারা দেশের সম্পদ আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়। তারা নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে কেবল মানুষের স্বার্থের রাজনীতি করেন। লোভ, প্রতিহিংসা, ক্ষমতার দাপটের পরিবর্তে সততা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর সেবার মানসিকতা তাদের মধ্যে বিরাজমান। তারা ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে রেখেছেন রাজনীতিকে। তবে সততা বজায় রাখতে গিয়ে পদে পদে তাদের প্রতিবন্ধকতা ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। তার পরও নিজ আদর্শে অটল ও অবিচল তারা। আজ এমনই একজন রাজনীতিবিদের কথা লিখছি, যাকে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে । তিনি হলেন প্রিয় মুখ, কুমিল্লা-১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য, দাউদকান্দি-তিতাসের মাটি ও মানুষের নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর।

সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল, ব্যক্তিত্বে অমায়িক, কথাবার্তায় বিনয়ী, চলাফেরায় নম্র ও দরাজ কণ্ঠের অধিকারী আবদুস সবুর ভাই একজন প্রকৌশলী, সফল রাজনীতিবিদ, সফল সংগঠক ও আলোকিত মানুষ। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী রাজনীতির অনুসরণ, অনুকরণ ও মনেপ্রাণে অন্তঃকরণের পর ছাত্রজীবন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির চর্চায় মনোনিবেশ করেন তিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজের আগামনী বার্তাটা পৌঁছে দেন সকলের মাঝে। তিনি শুধু ছাত্র হিসেবে মেধাবী তাই নয়, তিনি রাজনীতিতেও প্রজ্ঞা ও মেধার বিকাশ ঘটিয়ে এগিয়ে গেছেন বীরদর্পে। আওয়ামী রাজনীতির সংগ্রামী এ আদর্শ তৃনমূল থেকে রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিচরণ করছেন। দাউকান্দি যেনো তার অস্তিত্ব ও হৃদয়জুড়ে। তার মননে, মগজে একাকার হয়ে আছে দাউদকান্দি-তিতাসের মাটি ও মানুষ। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলার সময়ও দেখেছি, অবধারিতভাবেই তার মুখ থেকে বের হয়ে গেছে দাউদকান্দি প্রসঙ্গ। শেকড়ের প্রতি, এলাকার প্রতি, এলাকাবাসীর প্রতি এমন দরদ, মমতা, আবেগ আর অকৃত্রিম ভালোবাসা কোনো রাজনীতিবিদের থাকতে পারে, সেটা আবদুস সবুর ভাইকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কী করলে দাউদকান্দি সারা দেশের মধ্যে রোলমডেল হবে, কী করলে দাউদকান্দিবাসী স্বস্তি ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, কী করলে দাউদকান্দি মানুষ সম্মানিত হবে, কী করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দাউদকান্দিকে মনপ্রাণ দিয়ে আগলে রাখবে সেসব চিন্তা-চেতনা, ভাবনা, স্বপ্ন সারাক্ষণ তাকে বিভোর করে রাখে। তাই তো দাউদকান্দিবাসী তাকে একান্ত আপন করে নিয়েছেন। তাদের সুখ-দুঃখে, বিপদ-আপদে সর্বাগ্রে প্রিয় নেতারই সান্নিধ্য কামনা করেন তারা।

দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়নের বর্ণাঢ্য পরিবারের সন্তান ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর।তিনি বুকে টেনে নেন দাউদকান্দি-তিতাসের ক্লান্ত-শ্রান্ত-ঘর্মাক্ত কৃষক-শ্রমিককে আর আপন করে নেন আপামর জনতাকে। একান্তে কথা বলেন দাউদকান্দির মাটির সঙ্গে, বাতাসের সঙ্গে আর স্বপ্ন দেখেন দাউদকান্দিকে নিয়ে। দাউদকান্দিবাসীও তাকে কাছে টেনে নেন, সুখ-দুঃখের গল্প শোনান। তাকে ঘিরে নিজেদের আশা-আকাঙ্খার স্বপ্ন বুনতে থাকেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের স্বপ্নেরা ডালপালা মেলতে থাকে। তাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মায়, তাই তো নারী-পুরুষনির্বিশেষে দলে দলে মানুষ আবদুস সবুর ভাইয়ের ভক্ত, অনুরাগী ও শুভাকাঙ্খীতে পরিণত হয়। তারা ভোট দিয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে এমপি নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছেন।

ফল ধারণ করার পর বৃক্ষ যেমন নুয়ে পড়ে, আমাদের বিশ্বাস এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এখন তিনি আরো বিনয়ী ও বিনম্র হয়ে যাবেন। সংসদে ও সংসদের বাইরে এলাকা তথা দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখার নিরন্তর প্রয়াস চালাবেন। দাউদকান্দিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মক্তব-মাদ্রাসা-এতিমখানা, মন্দির, হাসপাতাল, পৌরসভা, অবহেলিত দাউদকান্দি উত্তর এলাকা সর্বত্র উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। এলাকার বিভিন্ন সংগঠন, ক্লাব, সমিতি কোনো কিছুই বঞ্চিত হবে না অর্থ বরাদ্দ থেকে। বিদ্যুতের ব্যবস্থা, খেলাধুলার আয়োজন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, ধর্মীয় সমাবেশ, নানা রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, এতিম ও অনাথদের পাশে দাঁড়ানো, অসহায় ও দরিদ্র মানুষকে যেভাবে সহায়তা করেছেন এখন যেনো তা নেশায় পরিণত হয়। জন্ম-মৃত্যু, জানাজা, দুর্ঘটনা, বিয়েশাদি, ওয়াজ-মাহফিল, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী তথা প্রতিটি উপলক্ষে আবদুস সবুর ভাইয়ের উপস্থিতি আগে যেমন ছিল এখন তারচেয়ে আরও বেশী বিদ্যমান থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।

নবনির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর ভাইকে মন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত করা হলে এলাকার উন্নয়ন ও দেশ সেবা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনি আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমাদের আবেদনটি সদয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি।

লেখক:সহকারী রেজিস্ট্রার,
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরো পড়ুন