ক্রেতার অপেক্ষায় লালমাই পাহাড়ের কাঁঠাল বিক্রেতারা

 

inside post

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
জামমুড়া। কুমিল্লা লালমাই পাহাড়ের একটি এলাকা। এখানের পাহাড়ের ভাঁজে, বাড়িতে আর সড়কের পাশের বাতাসে ভাসছে কাঁঠালের মিষ্টি সৌরভ। কাঁঠাল বিক্রির জন্য সড়কের পাশে নিয়ে অপেক্ষা করছেন বাগান মালিক ও খুচরা বিক্রেতারা। জামমুড়ার মতো একই দৃশ্য দেখা যায়,পাহাড়ের হাতিগাড়া, ধনমুড়া, সালমানপুর, রাজারখোলা, চৌধুরীখোলা, ভাঙ্গামুড়া, শ্রীবিদ্যা, বারপাড়া, ধর্মপুর ও রতনপুরে।


সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,তখনও ঘড়ির কাটা সকাল ৬টায় পৌঁছেনি। একটু আগেও বৃষ্টি ঝরেছে। চারপাশ ¯স্নিগ্ধ শীতল। জামমুড়ায় সড়কের পাশে চারটি দোকান। তিনটির সামনে কাঁঠাল স্তূপ। খুচরা বিক্রেতারা কাঁধে ভার ঝুলিয়ে কাঁঠাল নিয়ে আসেছেন। এরকম সজীব ত্রিপুরা ও কামাল হোসেনসহ কয়েকজনকে ঝুড়িতে ভরে কাঁঠাল আনতে দেখা গেল। সিএনজি অটো রিকশা ও পিকাপ ভ্যান ভরে কাঁঠাল কিনে নিতে দেখা গেল পাইকারি ব্যবসায়ীদের।

 


স্থানীয় কৃষক সুন্দর আলী। তিনি একটি দোকানের সামনে কাঁঠাল রেখেছেন। তার সহযোগী লাল মিয়া ও সোহাগ মিয়া। পাইকারি ব্যবসায়ী এলে বিক্রি করবেন। তিনি বলেন, তিনি প্রায় ৪০বছর ধরে কাঁঠালের ব্যবসা করেন। তার নিজের বাগান নেই। অন্যের বাগান লিজ নিয়েছেন। বাগানে ২০০এর বেশি কাঁঠাল গাছ রয়েছে।
বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, ছোট সাইজের কাঁঠাল ২০-৩০টাকা,মাঝারি ৪০-৬০টাকা এবং বড় সাইজ ৬০-১০০টাকায় পাইকারি বিক্রি করেন। এখানে ক্রেতা তাদের সুবিধা হতো বলে তিনি জানান।
পাইকারি ক্রেতা চান্দিনা সদরের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। তিনি সিএনজি অটো রিকশা যোগে কাঁঠাল নিয়ে যান। তিনি বলেন, লালমাই পাহাড়ের কাঁঠাল স্বাদে অনন্য। এখানের কাঁঠালের বেশ সুনাম রয়েছে। দামও তুলনামূলক কম। তাই তিন চার বছর ধরে এখান থেকে কাঁঠাল নিয়ে যাই।


স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, জামমুড়া এলাকায় কম দামে কাঁঠাল পাওয়া যায়। কাঁঠালের স্বাদও ভালো। এলাকাটা একটু ভিতরে হওয়ায় ক্রেতা কম। ক্রেতা খোঁজা ও লাভজনক বাজার খুঁজে নিতে তাদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি অফিসার জোনায়েদ কবির খান বলেন,লালমাই পাহাড়ের অধিকাংশ এলাকা সদর দক্ষিণ উপজেলায় পড়েছে। কাঁঠাল চাষ করে এখানের কৃষকরা ভালো আয় করেন। কাঁঠালের চাষ বাড়াতে কৃষি বিভাগ তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান বলেন, কুমিল্লার ১৭উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কাঁঠাল গাছ রয়েছে। লালমাই পাহাড়ে বেশি কাঁঠালের চাষ হয়। ফল সংগ্রহের পর গাছের ঢাল ছাটাই ও নিয়ম মতো সার প্রয়োগ করলে কাঁঠালের উৎপাদন দ্বিগুণ বাড়বে।

আরো পড়ুন