কবে দূর হবে কান্দিরপাড়-রানীরবাজার সড়কের দুর্ভোগ?

আল আমিন কিবরিয়া।। 

বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়-রানীরবাজার সড়কটি। পানিতে তলিয়ে গেলে সড়কটিকে দেখে বোঝার উপায় থাকেনা, এটি ডোবা নাকি সড়ক। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ সড়ক ব্যবহারকারী হাজার হাজার পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও চালকরা জানান,  পানি সরার জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।

কান্দিরপাড় নজরুল অ্যাভিনিউ থেকে ট্রমা সেন্টার পর্যন্ত সড়কে প্রায় হাঁটু পানি। ছোট-বড় গর্তে ইটগুলো গলে পানির সাথে মিশে গেছে। বাগিচাগাঁও থেকে রানিরবাজার হয়ে স্টেশন রোড মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
গর্ত ও হাঁটুসমান পানির কারণে সমস্যা হচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন পরিবহন চলাচলে। সড়কে পানি থাকলে ব্যবসায় ভাটা পড়ে দুই পাশের দোকানগুলোতে। থাকেনা বেচা বিক্রি। কয়েকটি দোকানের ভিতরেও পানি। পানির মধ্যেই দোকান খুলে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। সড়কের সাথেই ময়লার ভাগাড়। পানি বেড়ে ভাগাড়ের ময়লার ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে সড়কজুড়ে। পানি বাড়ায় অকেজো ড্রেনগুলোর ময়লাও উঠে এসেছে পানির সাথে। এতে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।

নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকার চারজন ব্যবসায়ী বলেন, বৃষ্টি হলে কান্দিরপাড়-ধর্মপুর সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। লোকজন হাঁটাচলা করতে পারে না। এ কারণে আমাদের ব্যবসায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। যেখানে সড়কসহ হাঁটাচলার পথ ডুবে আছে সেখানে কিআর বেচা বিক্রি হয়। নজরুল অ্যাভিনিউয়ের দক্ষিণ পাশে একটি ড্রেন আছে। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এই সড়কের পানি ওই ড্রেন দিয়ে সরে যেত। ড্রেনটির উপরে স্লাব থাকায় মানুষ সড়কে পানি থাকলেও মার্কেটের পিছন দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারত। কিন্তু ওই রাস্তাটি এখন দখল হয়ে গেছে।
এ সড়কে ছোট্ট একটি ভাতের হোটেল মনোয়ারা বেগমের। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলে তার হোটেলের ভিতর বাহিরে পানি জমে থাকে। পানির মধ্যে হয়না বেচা বিক্রি। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হলে হোটেল বন্ধ রাখা লাগে তার। এতে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
পথচারী আব্দুল লতিফ ও মাঈনুল ইসলাম বলেন, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করছেন। কিন্তু এ সড়কটি নিয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কোনো ভূমিকাই নেই। বৃষ্টি এসে চলে যায়। কিন্তু সড়কের পানি সরেনা। ড্রেনগুলোর বেহাল অবস্থা। এ সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা আইন কলেজ, কুমিল্লা মডার্ণ প্রাইমারি স্কুল ও মডার্ণ হাইস্কুল, ফরিদা বিদ্যায়তন, আর আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, রাণীর বাজার, রেলস্টেশন, শাসনগাছা বাস টার্মিনালসহ কর পরিষদ করতে কর ভবনসহ কয়েকটি সরকারি দফতরে যেতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।
অটো চালক মো. খোকন মিয়া বলেন, আমাদের গাড়ির অনেক ক্ষতি হচ্ছে। কখনো বেয়ারিং, কখনো কল-কব্জা অকেজো হয়ে পড়ে। গাড়িতে যাত্রী উঠলে ভয় পায়।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. নাঈম বলেন, আমি অশোকতলা থাকি কলেজে যেতে আসতে এই সড়কটি দিয়ে যাওয়া লাগে আমার। সড়কে পানি বেশি থাকলে কাঁদা লেগে ড্রেস নষ্ট হয়ে যায়। হাটা চলা করা যায় না।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভূঁঞা বলেন, সড়কের কাজটি কন্ট্রাক্টর এক অংশ শেষ করেছে। বাকি অংশটি শেষ করার জন্য তাকে বারবার ফোন করে বলা হচ্ছে। সে কাজ করছে না। যদি সোম-মঙ্গলবারে কাজ না ধরে, আমরা বুধবারে অন্য ব্যবস্থা নিব। আর নজরুল অ্যাভিনিউর দক্ষিণ পাশে ড্রেনটি দখল হয়ে আছে শুনেছি। এখন অভিযান বন্ধ। আমরা কয়েক মাসের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে ড্রেনটি দখল মুক্ত করব।