ডাক্তার, নার্স ও নিরাপত্তা কর্মী গ্রেফতারের প্রতিবাদে কুমিল্লায় মানববন্ধন

 

inside post

হাসিবুল ইসলাম সজিব।।

আমরা অনেক সময় অপারেশন থেকে সরে গিয়ে নিজের শরীর থেকে রক্ত দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। যার নির্দেশে গুলি করে এবং যারা গুলি করে তাদের গ্রেফতার না করে চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তারদের হত্যার দায়ে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা ডেল্টা হেলথকেয়ারের ডাক্তার, নার্স ও নিরাপত্তা কর্মীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে কুমিল্লায় মানববন্ধনে এসব কথা বলেন চিকিৎসা, নার্স এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

২১জানুয়ারি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ ও মানববন্ধনে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, ডাক্তাররা মানবতার কর্মী। যখন একটা রোগী আসে ডাক্তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে রোগীকে বাঁচানোর জন্য। অনেক সময় অপারেশন থেকে সরে গিয়ে নিজের শরীর থেকে রক্ত দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। পুলিশ গুলি করল রোগী ডাক্তারের কাছে আসলো মৃত। ডাক্তার জানালেন রোগী মারা গেছে তাহলে কি সে খুনি। এটা একটা ষড়যন্ত্র। অন্তবর্তী সরকার যেন দেশ বা জাতির জন্য ভালো কিছু করতে না পারে এবং স্বাস্থ্য খাতকে অস্থির করে রোগীদের পার্শ্ববর্তী দেশে নিয়ে যেতে পারে এবং ব্যবসা ভালো করে করতে পারে তার জন্য কুচক্রী মহল এ ঘটনা ঘটায়। মৃত রোগীর জীবন তো আমার বাঁচাতে পারি না, তাহলে তো নিজের জীবন দিয়ে বাঁচিয়ে নিতাম।আমাদের নামে কেন মামলা? আমরা নিরীহ, আমরা সাদা পোশাক পরি তার জন্য? যারা গুলির নির্দেশ করেছে এবং যারা গুলি করেছে তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। ডাক্তার, নার্সসহ যাদেরকে গ্রেফতার করেছে তাদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসুম হাসান বলেন, কিছু হলেই ভুল চিকিৎসা। ডাক্তার কখনো রোগীকে ভুল চিকিৎসা করে না। আগে পুরো বিষয় জানতে হবে। তার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয় একটি বোর্ড গঠন করা হোক। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দিবে ভুল চিকিৎসা নাকি অন্য কারণে রোগী মারা গেছে। ঢাকায় গ্রেফতারকৃত সকল ডাক্তার, নার্স এবং কর্মীদের মুক্তি এবং যারা হত্যায়  জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হোক। নয়তো আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জহির ঊদ্দীন মুহাম্মদ বাবর বলেন,খুন করলো পুলিশ, গুলি করলো পুলিশ আর গ্রেফতার হলো ডাক্তার নার্স ও নিরাপত্তা কর্মী। পুলিশ গুলি করে নির্দেশদাতা ওই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা। তাদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে নিরীহ মৃত ঘোষণা করছে তার বিরুদ্ধে হত্যার মামলা করা হয়েছে। নার্স এর বিরুদ্ধে হত্যার মামলা করা হয়। হত্যার মামলা করা হয় নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে। অথচ ডাক্তার, নার্স এবং নিরাপত্তা কর্মীসহ সবাইকে বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষে হতে তোমার যদি বাইরে আসো তাহলে তোমারকে গুলি করা হবে। এ ভিডিও আছে এবং আপনারা সবাই দেখেছেন। আমাদের তিনটি দাবি রয়েছে। প্রথমটি মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।দ্বিতীয় যে পুলিশ গুলি করেছে তাকে শনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মামলা করতে হবে। তৃতীয় ডাক্তার, নার্স ও নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে যারা মামলা করেছে তাদেরকে রের করে বিভাগীয় মামলা দিতে হবে।

ডা. মোঃ আরিফ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাবেদ আহমেদ,এফ সি পি এস ট্রেইনি কুমিল্লা মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সমন্বয়ক ডা.সাইদুর রহমান,নার্সিং এসোসিয়েশনের কুমেক সভাপতি মো. ফরহাদ হোসেন,কুমেক ছাত্র প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন,ডা, গিয়াস উদ্দিন, ডা. মোঃ শরীফ হোসেন, ইন্টার্ন ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

আরো পড়ুন