মৌচাষে বাড়ছে সরিষা ধনিয়ার ফলন

মধুর জন্য ভিড়
অফিস রিপোর্টার।।
নোয়াগাঁও। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি গ্রাম। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যে দিকে চোখ যায় সেখানে হলুদ সরিষা ও সাদা ধনিয়া ফুলের আস্ফালন! হলুদ ও সাদা ফুলে উড়ছে মৌমাছি। ফুলে ফুলে ভৌঁ ভৌঁ শব্দে মৌমাছি উড়ে। যেন মৌমাছির রাজ্য। সেই মৌমাছির দল ফুলের মধু নিয়ে ছুটছেন জমির পাশে রাখা মধুর বাক্সে। মধু রেখে আবার ফিরছেন জমিতে। এই দৃশ্য দেখে খুশি কৃষক ও মৌচাষিরা। কারণ মৌমাছির মাধ্যমে ফুলের বেশি পরাগায়ণ হচ্ছে। এতে বাড়বে ফসল উৎপাদন। এদিকে বেশি মধু আহরণের আশায় খুশি মৌচাষিরা। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে নোয়াগাঁওসহ বি-চাপিতলা,শ্রীকাইল,রামচন্দ্রপুর,আমিননগর,রোয়াচালা,পীরকাশিমপুর, কামাল্লা, কাগাতুয়া ও আকুবপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠে।

inside post


সূত্রমতে, জেলায় এবার ১৫হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। তার মধ্যে মুরাদনগরে চাষ হয়েছে ৯হাজার ৯ হেক্টর জমিতে। এছাড়া জেলার উল্লেখযোগ্য মুরাদনগরে ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধনিয়ার চাষ হয়েছে।
কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন ও আবদুল মান্নান বলেন, আগে আমাদের ভুল ধারণা ছিলো। মৌমাছি এলে ফসল উৎপাদন কমে যায়। তবে পরে কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানলাম-মৌমাছির কারণে ২০-২৫ভাগ ফসল উৎপাদন বাড়ে। এছাড়া গ্রামে এখন কম দামে খাঁটি মধু পাওয়া যায়।
পাশের দেবিদ্বার উপজেলার বাসিন্দা মৌচাষি এমদাদুল হক। তিনি বলেন,মুরাদনগরে মধুর খোঁজে শতাধিক চাষি বাক্স ফেলেছেন। তিনিও ২৫০টি বাক্স ফেলেছেন। তিনি আশা করছেন এই মৌসুমে ৪টন মধু পাবেন।


সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,কুমিল্লা,সাতক্ষীরা,টাঙ্গাইল,যশোর,মানিকগঞ্জ ও পাবনা থেকে মৌচাষিরা এসেছেন। কিছু এলাকার কৃষক মৌ বক্স স্থাপনে আপত্তি জানাচ্ছেন। সেখানে উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. রায়হান ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নুর আলম মাঠে গিয়ে তাদের মৌ বক্স স্থাপনের সুফল বর্ণনা করছেন। এদিকে মৌচাষিরা জমে যাওয়া মধু সংগ্রহ করছেন। ট্রে থেকে পড়ছে তাজা টসটসে মধু। বাতাসে ভাসছে মধুর মিষ্টি ঘ্রাণ। স্থানীয়রা তাজা মধু কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার পাভেল খান পাপ্পু বলেন,জেলার প্রায় অর্ধেক সরিষা চাষ হয়েছে মুরাদনগরে। এখানে কৃষকের ফসল উৎপাদন বাড়াতে মৌচাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গত বছর ১৭টন মধু পাওয়া গেছে। এবার জমি ও মৌমাছির পরিমাণ বেড়েছে। তাই ৪০টন মধু পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

আরো পড়ুন