থমকে আছে তিন বাস টার্মিনাল স্থানান্তর ও সম্প্রসারণ

বাহার উদ্দিন খান।।
শহরের যানজট নিরসন ও গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্পের আট বছর পার হলেও শাসনগাছা ও চকবাজার বাস টার্মিনাল স্থানান্তর এবং জাঙ্গালিয়া টার্মিনাল সম্প্রসারণ কাজ এখনো দৃশ্যমান হয়নি। এতে একদিকে যেমন নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে, অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় বাড়ছে হু-হু করে।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা উন্নতিকরণের লক্ষে ২০১৮ সালে জাইকার অর্থায়নে “আরবান ডেভেলপমেন্ট সিটি গভারনেন্স প্রজেক্ট (ইউডিসিজিপি)” প্রকল্পের অধীনে ধর্মসাগর পাড় উন্নয়ন, ময়লা ফেলার জন্য ডাম্পিং স্টেশন তৈরি, শাসনগাছা বাস টার্মিনালকে আলেখারচরে স্থানান্তর ও চকবাজার বাস টার্মিনালকে মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন স্থানে স্থানান্তর এবং জাঙ্গালিয়া টার্মিনালকে আরও ১৫ একর সম্প্রসারণসহ আরও কিছু কাজের জন্য জাইকার সাথে প্রাথমিকভাবে ৪৮০ কোটি টাকা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু প্রকল্পের অধীনে থাকা অন্যান্য কাজগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হলেও বাস টার্মিনাল সম্পৃক্ত কাজের তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, নতুন টার্মিনালগুলোর ড্রইং ডিজাইন অনেক আগেই করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ায় সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও জেলা প্রশাসন, ভূমি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, মালিক সমিতি ছাড়াও অনেক পক্ষ জড়িত। প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণেই মূলত বাস টার্মিনালের স্থানান্তর ও সম্প্রসারণের কাজে স্থবিরতা রয়েছে। নগরীর জনসাধারণ ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, এই স্থবিরতার ফলে একদিকে যেমন জনভোগান্তি বেড়ে চলছে তেমনি প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ অনেকগুণ বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, জাইকার অর্থায়নে যে কাজগুলো হয়েছে সেগুলো মানসম্পন্ন হয়নি। কুমিল্লাকে বসবাসযোগ্য রাখতে অতিদ্রুত বাস টার্মিনালগুলোকে পরিকল্পিতভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ও উচ্চ মানসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপদ মানে উন্নীত করা দরকার। তবে যে জায়গাগুলোতে টার্মিনালগুলো আছে সে যায়গাতেই চাইলেই বহুতলবিশিষ্ট বে সিস্টেম করে এগুলো করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কবির হোসেন বলেন, এটা নিয়ে বছরের শুরুতেও বাস মালিক সমিতিসহ অংশীজনদের সাথে সভা হয়েছিল। কিন্তু এই কাজের বাস্তবিক কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। শহরকে বাঁচাতে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত দৃশ্যমান হওয়া দরকার।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন চিশতি আমোদকে বলেন, অনেকগুলো পক্ষ জড়িত এই প্রকল্পের মধ্যে। সব পক্ষগুলোর আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখছি টার্মিনালের কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
