সবার নজর কায়বোবাদ-আসিফের আসনে

কুমিল্লা-৩(মুরাদনগর)

inside post

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
এখনও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তবে কুমিল্লা-৩(মুরাদনগর) আসনে ৬মাস আগে থেকেই নির্বাচনের ঢামাঢোল বাজছে। সবার নজর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়বোবাদ ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়ার দিকে। এখানে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এই উত্তাপ জাতীয় পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছে। এই আসনে কায়কোবাদ ও আসিফ ছাড়াও বিএনপির সাবেক নেতা গোলাম কিবরিয়া সরকার, জামায়াতের উত্তর জেলার কর্মপরিষদ সদস্য ইউসুফ হাকিম সোহেল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে।
কায়কোবাদের সমর্থকদের দাবি এখানে বিএনপিকে ঠোকাতে আসিফ আওয়ামী লীগ মাঠে বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে। এছাড়া পুলিশকে দিয়ে হয়রানি করছেন। রাজনৈতিক কারণে কায়কোবাদকে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরায় কায়কোবাদের নেতৃত্বে মুরাদনগরের বিএনপি চাঙা হয়ে উঠেছে। তিনি নিয়মিত সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। এদিকে আসিফের সমর্থদের বক্তব্য, নতুনের জোয়ার ঠেকাতে না পেরে হামলাসহ নানা অপপ্রচার করছেন কায়কোবোদের লোকজন।
স্থানীয়দের ভাষ্য-এখানে পারিবারিক কিছু হলেও তাতে রাজনীতির রঙ দেয়া হয়। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষ দেন। কায়কোবাদ-আসিফের মুখোমখি অবস্থানের কারণে মুরাদনগর অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়া বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করবেন। এলাকায় নির্বাচন করবেন না বলে জানান। তবে তিনি ঢাকায় বিএনপি বা এনসিপি থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে এলাকায় আলোচনা রয়েছে।
আসিফের বাইরে তার সমর্থনে মুরাদনগরে নির্বাচন করতে পারেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়া সরকার।
কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে মুরাদনগরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বাখরনগরে আমার গাড়িতে ব্রাশফায়ার করা হয়। পরিকল্পনা ছিল আমাকে ব্রিকফিল্ডের আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার। রাজধানীতে গ্রেনেড হামলা-মালায় আওয়ামী লীগ আমাকে জড়িয়ে দীর্ঘ বছর দেশান্তরিত করেছে। ফ্যাসিবাদ পতনের পর দেশে ফিরে মুরাদনগরের সাধারণ মানুষের চোখে-মুখে যে ভালবাসা দেখেছি এবং তাদের অনুরোধেই মুলত এবার নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো। তবে এখনো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আমার আল্লাহ যদি এমপি বানাতে চায়, পৃথিবীর কোন শক্তি আমাকে হারাতে পারবেনা।
গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন,শুনেছি আসিফ নির্বাচন করবেন। তিনি না করলে জনগণ চাইলে আমি নির্বাচন করবো। মুরাদনগরের মানুষ কোন এক পরিবারের কাছে আর জিম্মি থাকতে চায় না। ব্যরিস্টার রফিকের পর মুরাদনগরে খুব বেশি উন্নয়ন হয়নি। অবহেলিত মুরাদগরকে এগিয়ে নিতে কাজ করবো।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া বলেন,কায়কোবাদের সময়েই মুরাদনগরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। এখন অনেকে পতিত আওয়ামী লীগকে সাথে নিয়ে মুরাদনগরে বিশৃংখলা করতে চায়। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছে। তাদের ১০ভাগ ভোটও নেই।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়ার সমর্থক ছাত্র সমন্বয়ক অ্যাড. ওবায়দুল হক বলেন, মুরাদনগরের মানুষকে মুক্তি দিতে আমাদের নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কে কোন দল থেকে প্রার্থী হবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়।
জামায়াতের প্রার্থী দলের উত্তর জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ইউসুফ হাকিম সোহেল বলেন, আমরা মানুষের দুয়ারে যাচ্ছি,ভালো সাড়া পাচ্ছি। আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের শাসনের জন্য মানুষ দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছে।
উল্লেখ্য-২২টি ইউনিয়ন ও দু’টি থানা নিয়ে গঠিত মুরাদনগর উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-৩ সংসদীয় আসন। এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৬০ হাজার ৯৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৪৭ হাজার ৫৪৮ জন এবং মহিলা দুই লাখ ২৩ হাজার ৪৩৬ জন।

আরো পড়ুন