ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব : ২২ মামলায় ২৩ হাজার আসামী-গ্রেপ্তার ৩২
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সৃষ্ট তাণ্ডবের ঘটনায় এ পর্যন্ত দায়ের হয়েছে ২২ মামলা। এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে অন্তত ২৩ হাজার জনকে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামী ১০৭ জন হলেও জানা যায়নি তাদের নাম-পরিচয়। তবে পুলিশ এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে ৩২ জনকে।
শনিবার (৩ এপ্রিল) দায়েরকৃত নতুন তিনটি মামলার সবক’টিই রেকর্ড হয়েছে সদর মডেল থানায়। নতুন মামলাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ভাঙচুর ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের মামলা, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার’র (ভূমি) কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা, জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে ভাঙচুরের মামলা। এনিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ভাঙচুর-অগ্নিযোগের ঘটনায় ১৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও গত বুধবার পর্যন্ত সরাইল থানায় একটি, আশুগঞ্জ থানায় দুইটি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দায়েরকৃত ২২ মামলায় ১০৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা প্রায় ২৩ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানানো হয়নি। সহিংসার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ। এদিকে, হামলার ঘটনার সময় বেশকিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে। পুলিশ এসব ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আবদুর রহিম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সদর থানায় ১৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১০৭ জনের নামোল্লেখ্য করে অজ্ঞাতনামা ২৩ হাজার মানুষকে আসামী করা হয়েছে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩২ জনকে। গত ১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থাপনাগুলো পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ পরিদর্শন করেছেন।’
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদ্রাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এসময় তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জন কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, পৌরসভা কার্যালয় ও আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব, জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবনসহ ত্রিশটিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে।