কম ঘুমানোর কারনে হতে পারে যেসব সমস্যা
আমোদ ডেস্ক।।
ঘুম আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘুম হচ্ছে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কাজের মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। পর্যাপ্ত ঘুম মানুষের জীবনে আনে প্রশান্তি, মন রাখে প্রফুল্ল, কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে বহুগুন। বর্তমান জীবনযাত্রায় ঘুমের সময় ক্রমশ কমে আসছে। এর ফলেই বাড়ছে বিভিন্ন রোগ।
আমাদের শরীর সারা দিনের কাজকর্মের পর ছন্দগতভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন ঘুমের প্রয়োজন পড়ে। একজন স্বাভাবিক মানুষ দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা, অথবা সব মিলিয়ে প্রায় সাত ঘণ্টা ঘুমায়। এই ঘুম যখন কম হয়, তাকে অনিদ্রা বলা হয়। কিন্তু সেটি কীভাবে হয়? ঘুম আসতে দেরি হলে অনিদ্রা হতে পারে। অথবা ঘুম এলে বারবার ভেঙে যায়। অথবা একবার ঘুম ভাঙলে পরবর্তী সময়ে ঘুম আসতে চায় না। খুব সকালবেলা ঘুম ভেঙে যায়। এই সবগুলোকে বলা হয় অনিদ্রা বা ইনসোমনিয়া।
নিয়মিত কম ঘুমানোর জন্য আপনার যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে-
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বৃদ্ধি করে: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বা কম হলে আমাদের শরীরের ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। ফলে বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার টেনশনের মতো সমস্যা।
হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি করে: আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালী কিছুটা হলেও বিশ্রাম পায়। কিন্তু ঘুম না হলে বা কম হলে প্রতিনিয়ত কার্ডিওভ্যস্কুলার সমস্যা বাড়তে থাকে। এর ফলে হার্টের সমস্যা বাড়তে থাকে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়: দীর্ঘদিন রাতে না ঘুমানো বা কম ঘুমানোর ফলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন ব্যহত হয়। যার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে: আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী ‘লিভিং অরগানিজম’। কিন্তু আমরা না ঘুমালে এই ‘লিভিং অরগানিজম’ গুলো কাজ করতে পারে না। ফলে ক্রমশ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়: মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওরেক্সিন উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে যায়। ফলে অতিরিক্ত বিষণ্ণতা, হ্যালুসিনেশন, স্মৃতিভ্রংশের মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হজমের সমস্যা বৃদ্ধি করে: প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বাড়তে পারে হজমের সমস্যাও। আমরা না ঘুমালে আমাদের শরীরের পাচন ক্রিয়ায় সাহায্যকারী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে খাবার হজমে সহায়ক পাচক রসগুলি উপযুক্ত মাত্রায় নিঃসরণে বাধা পায়। তাই হজমের নানা সমস্যা শুরু হয়।
ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার হাত থেকে বাঁচার জন্য একটি সুস্থ জীবনযাত্রা বেছে নিতে হবে। সবকিছু যেন নিয়মানুবর্তী হতে হবে। এরপর ভালো ঘুমের অভ্যাস যদি তৈরি করেন, ঘুমের স্বাস্থ্যবিধির মধ্য দিয়ে যদি যান, তাহলেই অনিদ্রার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং অনেক শান্তিতে থাকতে পারবেন।