গৃহবধূকে গাছে বেঁধে শাশুড়ী-ননদের নির্যাতন
প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তার শ^শুর- শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। পুলিশের সহায়তায় উপজেলার ধামতী গ্রামের উত্তর পাড়াস্থ (কোরের পাড়) দুলাল মিয়ার বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন তার স্বজনেরা। ওই ঘটনায় দেবিদ্বার থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সারোয়ার তালুকদার একদল পুলিশ নিয়ে বুধবার রাত ১১টায় ভিক্টিমকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর তাকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায় স্বজনরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে নির্যাতিতার শাশুড়ি জুলেখা বেগমকে আটক করেছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা গৃহবধূ জ্যোৎ¯œা জানান, প্রায় ১৬ বছর পূর্বে ধামতী গ্রামের দুলাল মিয়ার পুত্র হেলালের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরপক্ষকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক পরিশোধ করতে হয়। বিয়ের পরপরই বাবা মারা যান। এরই মধ্যে আমাদের সংসারে ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জন্ম হয়। প্রায় ১২ বছর পূর্বে আমার স্বামী ওমান যাওয়ার সময় আরো ২ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিলে আমার ভাইয়েরা ১ লক্ষ টাকা দেন। গত এক বছর পূর্বে সে দেশে এসে আবারো বাকী ১লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। স্বামী চলে যাওয়ার পর স্বামীর প্ররোচনায় আমার শ^শুর দুলাল মিয়া, শাশুড়ি জুলেখা বেগম, দুই ননদ মৌসুমী ও পাখী প্রতিনিয়ত নির্যাতন চালাতে থাকে। আমার মাথার চুলগুলো টেনে ছিঁড়ে প্রায় শেষ করে ফেলেছে। তাদের কিল-ঘুষি আর থাপ্পরে দাঁতগুলোও নড়ে গেছে। বুধবার বিকেলে বাবার বাড়িতে ১ লক্ষ টাকা এনে দিতে আবারো অমানবিক নির্যাতন চালায় শ^শুর, শাশুড়ি, ননদেরা। এক পর্যায়ে আমার দু’হাত দু’টি নারিকেল গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন চালায়। রাতে ঘরে নিয়েও একই অবস্থা করে।
নির্যাতিতার মা ফরিদা বেগম জানান, মেয়েকে বহুবার নিয়ে আসতে চেয়েছি। সে ৪ সন্তানের মায়ায় আসেনি। গত ১৫ বছরে অন্তত: ১০/১২টি সালিস হয়েছে, ছেলের পক্ষ সালিসের রায় মেনে পরে উল্টোটা করে। এখন আর কেউ সালিস করতে আসেনা। আমার আত্মীয় স্বজনও যায়না। আমরা গরিব মানুষ কত টাকা দিতে পারি। আমার ৪ ছেলে দিন মজুর।
পলাতক থাকায় এ ব্যাপারে নির্যাতিতা গৃহবধূর শ^শুর বাড়ির কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, অভিযান চালিয়ে ভিক্টিমের শাশুড়ি জুলেখা বেগমকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।