ফুলের গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন শিক্ষক
মোহাম্মদ শরীফ ।
দেখে মনে হবে যেন কোনো রাজনৈতিক নেতা শোডাউনে বের হয়েছেন। ফুল সজ্জিত গাড়ি, সামনে মোটরসাইকেলের শোডাউন। হাত নাড়িয়ে কুমিল্লা-নোয়াখালী আ লিক মহাসড়ক হয়ে ফিরছেন বাড়ি। এত সব আয়োজন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সৈয়দ মো. আবদুল আউয়ালের বিদায় উপলক্ষে। বৃহস্পতিবার ৪০ বছরে শিক্ষকতার জীবনের ইতি টেনে বাড়ি ফিরেছেন শিক্ষক সৈয়দ মো. আবদুল আউয়াল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটি ও সাবেক শিক্ষার্থীরা অশ্রু সিক্ত চোখে বিদায় জানিয়েছেন জাতি গড়ার এই কারিগরকে। ৪০ বছর তিনি বাই সাইকেল যোগে যাতায়াত করতেন। শেষ দিনে ফিরলেন ব্যতিক্রম ভাবে।
ফুল সজ্জিত গাড়িতে বিদায়ের পূর্বে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সৈয়দ মো. আবদুল আউয়ালের ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্বশীল শিক্ষকতার প্রশংসা করেন অতিথিবৃন্দ। বিদ্যালয়, ম্যানেজিং কমিটি, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
সূত্র জানায়,১৯৬৩ সালে নাঙ্গলকোটের টুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন আবদুল আউয়াল। ১৯৮৩ সালে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। পারিবারিক জীবনে স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তাঁর।
উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো মাসুদুল হক বলেন,তিনি আমার শিক্ষক ও দীর্ঘ দিনের সহকর্মী। এমন নম্র, ভদ্র ও জ্ঞানী মানুষ খুব কমই হয়। স্যারের বিদায়ে আমরা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি।
বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিছ মিয়া বলেন,তিনি আমার আমার ভালো একজন সহকর্মী ছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছি ব্যতিক্রমী ভাবে তাকে বিদায় দিতে।
বিদ্যালয় সভাপতি ডাঃ খায়রুল ইমরান অনি বলেন, তিনি ভাল মানুষ। দায়িত্বের প্রতি ছিলেন আন্তরিক। তার পরবর্তী সময় গুলো ভালো কাটুক।
দীর্ঘ ৪০ বছর চাকরি জীবন শেষ করে ব্যতিক্রম বিদায় অনুভূতি জানাতে গিয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আলহাজ্ব সৈয়দ মো. আবদুল আউয়াল বলেন, বাংলাদেশ এভাবে আর কোনো শিক্ষককে বিদায় দিয়েছে কি-না আমার জানা নেই। এটি আমার জীবনের বড় পাওয়া। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।