বেদে ও স্থানীয়দের দ্বন্দ্বে চান্দিনায় মহাসড়ক অবরোধ
অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লার চান্দিনায় বেদে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বন্দে দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বেদে সম্প্রদায়।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌঁনে ৬টার পর মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার হাড়িখোলা বেদে পল্লী এলাকায় মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে তারা। প্রায় ৩০ মিনিট অবরোধের পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। ইফতারের আগ মুহূর্তের অবরোধে চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
এর আগে বেদে পল্লীতে হাড়িখোলা এলাকার কয়েকজন যুবকের সাথে বেদেদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়। মহাসড়ক অবরোধ প্রতিবাদ করে বেদে সম্প্রদায়ের অন্তত ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ।
আহতরা হলেন- হাড়িখোলা এলাকার মতিন মিয়ার ছেলে মঈন উদ্দিন (২২), সহিদুল ইসলাম এর ছেলে আরিফ (১৮), মজিদ মিয়ার ছেলে আনিছ (২৭), মোসলেম মিয়ার মেয়ে ফাতেমা (২৫)। এছাড়া বেদে সম্প্রদায়ের আরও ৬জন আহত হয়। তাদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- হাড়িখোলা এলাকার সড়ক জনপদের খাস জায়গায় দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবৎ অবস্থান নেয় বেদে সম্প্রদায়। এরই মধ্যে হাড়িখোলা ও পাশ্ববর্তী থানগাঁও এলাকায় জমি কিনে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছেন তারা। বেদেদের বাড়ি-ঘর থাকলেও তাদের ব্যবহৃত পানি স্থানীয়দের ফসলি জমিতে নিস্কাশন করায় বাঁধা দেয় স্থানীয়রা। এতেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
হাড়িখোলা বেদে পল্লীর সর্দার রুহুল আমিন জানান- আমাদের বেদেরা অনেক কষ্টে উপার্জন করে ফসলী মাঠের মাঝে জমি কিনে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করছে। জমির আইল দিয়ে যাতায়াত করে আসছে তারা। আজ কয়েকদিন যাবৎ স্থানীয় চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদের উস্কানিতে স্থানীয়রা যাতায়াতের সব পথ বন্ধ করে দেয়। আজ চারদিন যাবৎ আমরা স্থানীয়দের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গিয়েও কোন সমাধান পাচ্ছি না।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- দুই পক্ষের ঘটনায় শালিশ দরবারের মাধ্যমে মিমাংসা করার জন্য বেদে সর্দারকে ডেকেছিলাম। তিনি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর আলোচনা করে বিষয়টি জানানোর কথা বলে বিকেলে মহাসড়ক অবরোধ করে।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ শামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান- আমরা অভিযোগ পেয়ে সার্কেল স্যারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছিলাম। এরই মধ্যে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে দিয়েছে। আমরা দ্রুত এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। মারামারির ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।