ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চড় মারায় বন্ধুকে শ্বাসরোধে হত্যা
সাগর রাব্বি হত্যার বিষয়টি ফোনে তার মাকে জানায়
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে মোবাইল ফোন নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে চড় দেয়। এই চড় দেয়ার জেরে বন্ধু রাব্বিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বেপাত্তা হয় তারই বন্ধু সাগর। পলাতক সাগরের মায়ের মোবাইল ফোনে আসা মেসেজের সূত্র ধরে পুলিশ নিহত রাব্বির মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
সোমবার (১৯ জুন) বিকেলে জেলা শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকার একটি ঝোপ থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত রাব্বি মিয়া (১৭) শহরের মেড্ডা আরামবাগ এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে। অপরদিকে ঘাতক সাগর মিয়া (১৮) নেত্রকোনা জেলার আলী আজগর মিয়ার পুত্র এবং বর্তমানে জেলা শহরের ফুলবাড়িয়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। ঘটনার পর থেকেই সাগর নিখোঁজ।
নিহতের পরিবার, স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত রাব্বি এবং ঘাতক সাগর পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তারা উভয়েই মোবাইল ফোন কেনাবেচায় সম্পৃক্ত ছিলো। সম্প্রতি মোবাইল ফোন নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাগরকে চড় দিয়েছিলো রাব্বি। এরই জেরে বাড়ি থেকে রাব্বিকে ফোনে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। শনিবার (১৭ জুন) রাতে মোবাইল ফোন বেচাকেনার কথা বলে রাব্বি বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তার কোনো সন্ধান না পাওয়ায় রোববার (১৮ জুন) পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকালে রাব্বি নিখোঁজের পেছনে তার বন্ধু ফুলবাড়িয়া এলাকার সাগরের (১৮) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। রাতে সাগরের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ কিন্তু তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। সোমবার সকালে সাগরের মা লিলি বেগমকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে তিনি জানান, রাত দুইটার পর সাগরের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এসময় সাগরের মায়ের মোবাইল ফোনে একটি কল রেকর্ড পায় পুলিশ। সেই রেকর্ডে সাগরকে তার মাকে বলতে শোনা যায়, ‘রাব্বি তাকে একবার চড় দিয়েছিল। তাই তাকে মেরে এলাকার একবাড়ির ঝুপড়িতে ফেলে দিয়ে সে ঢাকায় পালিয়ে গেছেন।’ পরে কল রেকর্ড অনুযায়ী পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। এক পর্যায়ে পশ্চিম ফুলবাড়িয়ায় একটি বাড়ির ঝুপড়িতে রাব্বির মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সাগরকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।’