ভিটে মাটি বিক্রি করে প্রবাসে যাচ্ছেন তারা

অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনপাল গ্রাম। গ্রামের দিনমজুর বাবুল মিয়ার (ছদ্মনাম) ২ছেলে ১মেয়ে। বড় ছেলে কামাল হোসেন(২২) ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। এই আয়ে পরিবারের ভরণপোষণ পূরণ হচ্ছে না। কামালের আশা প্রবাসে গিয়ে বেশি আয় করে বাবা-মা,ভাই-বোনের মুখে হাসি ফোটাবে। তাদের এক স্বজন থাকেন সৌদি আরবে। ভালো আয় তার। তার সাথে যোগাযোগ করেছেন। তিনি ফ্রি ভিসায়(কাজের নিশ্চয়তা নেই) তাকে সৌদি আরব পাঠাবেন। তাকে দিতে হবে ৫লাখ টাকা। নিজেদের কোন জমি নেই। শেষ সম্বল আছে শুধু ঘরের জায়গা। সেটি বিক্রি করে দিয়েছেন। সেখান থেকে স্বজনকে দিয়েছেন ৩লাখ টাকা। আগামী সপ্তাহে টিকেট কাটতে হবে। সেই টাকা জোগাড় নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছেন কামালের বাবা বাবুল মিয়া।
বাবুল মিয়া বলেন,যিনি তাকে ফ্রি ভিসায় নিচ্ছেন তিনি নিকটজন। তাই কম টাকায় নিচ্ছেন। ঘরের জায়গা বিক্রি করে পাঠাচ্ছেন,কাজ না পেলে কি করবেন। কোথায় থাকবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। যারা ঘরের জায়গা কিনেছে। তারা কিছুদিন থাকতে দিবে বলেছেন। ছেলে টাকা পাঠালে তখন আবার জমি কিনবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লগ্নসার গ্রামের জামাল হোসেন। সৌদি আরব গেছেন ৬বছর আগে। ৬লাখ টাকা ঋণ করেছেন। এখনও টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। কাগজপত্র আপডেট না থাকায় এখন অবৈধ হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কখনও লুকিয়ে কাজ করেন। কখনও দেশ থেকে টাকা নিয়ে খাবার খরচ ও মেস ভাড়া চালান। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। এদিকে খরচ দিতে না পারায় পরিবারও ভাঙ্গনের পথে।
এদিকে সম্প্রতি কুমিল্লা শহরতলীর দিদার সমিতি এলাকার একটি মিলনায়তনে অভিবাসীদের সমস্যা নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ম্যাপ ও ওআরবি‘র জিএমসি সংগঠন এই আয়োজন করে। এতে জানানো হয়,কুমিল্লার সাড়ে ১৩ লক্ষ মানুষ প্রবাসে কর্মরত। কিছু মানুষ কাগজপত্র ছাড়া প্রবাসে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। তাদেরকে দক্ষ হয়ে সরকারের আইন মেনে প্রবাসে যেতে ওই সভায় পরামর্শ দেয়া হয়।
