মাদক ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা হয়ে ওঠেছিলো মহিউদ্দিন!

অফিস রিপোর্ট

মাদক ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা ওঠেছিলো মহিউদ্দিন! তাই তাকে হত্যা করা হয়েছে। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল এলাকা সংলগ্ন হায়দ্রাবাদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মহিউদ্দিন জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ সরকারের ছেলে। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়া হলেও তারা সপরিবারে কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বসবাস করতো।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুড়িচং এলাকায় হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হলেও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় মাদক বিরোধী কর্মকাণ্ডে বেশ তৎপর ছিল মহিউদ্দিন। সে পুলিশ, র‌্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের ইনফরমার হিসেবে কাজ করতো। মাদকের চোরচালান ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সে ভালো অবদান রাখে।  বুড়িচং এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাজুর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরপর তিনটি স্ট্যাটাস দেওয়া এবং সীমান্ত এলাকায় বেশ কিছু মাদকের চালান ধরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাহায্য করার কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন। তারা সীমান্তে কড়া নজরদারি সৃষ্টি করে। গেল কয়েক মাসে ওই উপজেলায় মাদকের বেশ কিছু বড় চালান ধরা পড়ে। ওইসব অভিযানে মহিউদ্দিন অংশগ্রহণ করতো। তাছাড়াও ওইসব অভিযানের অন্যতম সোর্স ছিল সে। মহিউদ্দিন একসময় সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিল। মারা যাওয়ার আগেও সে সাংবাদিকদের মাদক সংশ্লিষ্ট তথ্য দিয়ে সাহায্য করতো। মাদক ব্যবসায়ী রাজুর সাথে কয়েকদিন পূর্বেও বুড়িচং এলাকায় মহিউদ্দিনের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মাদক ব্যবসায়ী রাজুর বাড়ি বাংলাদেশে হলেও ভারতে তার বহু আত্মীয়স্বজন রয়েছে। ভারতের স্মাগলাররাও সীমান্তে মাদক, চোরাচালান ও অস্ত্র চালানের বিষয়ে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছিল। সবমিলিয়ে মহিউদ্দিন দুই দেশের সীমান্ত সন্ত্রাসীদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠে। আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠা ও উপজেলা প্রশাসনের মাদক বিরোধী কড়া অবস্থানের কারণে পাল্টা চ্যালেঞ্জ হিসেবে মহিউদ্দিনকে হত্যা করা হয়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, মহিউদ্দিনের মরদেহে পাঁচটি আঘাতের চিহ্ন আছে। তার মরদেহ পোস্ট মর্টেমের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে হত্যাকাণ্ডের সাথে রাজু নামক এক মাদকব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে আসছে। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
ব্রাহ্মণপাড়ার নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, মাদকের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় অভিযান আরও জোরালো করা হবে।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা জেলার পাঁচ উপজেলার ওপর দিয়ে ভারতের ১০৫ কিলোমিটার সীমান্ত অতিবাহিত হয়েছে। যার বেশিরভাগই ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলায় পড়েছে।