মাস্ক ও গ্লাভস পরে বরবটি চাষ!

জমি যেন কোন ল্যাবরেটরি
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
মাস্ক, গ্লাভস ও মাথায় ক্যাপ পরে বরবটি চাষ করতে কে কবে দেখেছে? সবজির জমি যেন একটি ল্যাবরেটরি! এছাড়া জমিতে খাবার খাওয়া যাবে না,পানি পান করা যাবে না, ধূমপান করা যাবে নাসহ নানা নিয়ম কানুন। এই নিয়ম পালন করা হচ্ছে বিদেশে সবজি রপ্তানি উপযোগী করতে। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামে এই দৃশ্য দেখা গেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় উত্তম কৃষি চর্চার(গ্যাপ) মাধ্যমে এই চাষ করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে বরবটি চাষ দেখে স্থানীয় কৃষকরা বিস্মিত। তারা ভালো ফলন দেখে এই পদ্ধতিতে চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মাঠে গিয়ে দেখা যায়,কুন্দার ঘোড়া গ্রামের মাঠে এক একর জমিতে বরবটির চাষ করেছেন গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ। জমিতে যারা প্রবেশ করছেন সবার হাতে গ্লাভস,মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ। মাচায় বাতাসে দুলছে বরবটি। যেন কোন সুন্দরী রমণীর কানে সুঁই সুতা দুল ঝুলছে। পাশে রয়েছে পোকা দমনের হলুদ পাতা ও সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ। যাতে ক্ষতিকর পোকা আটকে মারা যাচ্ছে। জৈব সার ব্যবহার ও জৈব বলাই নাশক প্রয়োগের মাধ্যমে এই সবজি চাষ করা হয়েছে। এক একটি বরবটি দুই হাত সমান লম্বা। ভালো ফলন হয়েছে। হাসিমুখে বরবটি তুলছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। বরবটি কোথায় রাখবে। কিভাবে বাজারজাত করবে তার নির্দেশনা দিচ্ছেন স্থানীয় উপ-সহকারী কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন।
কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নামমাত্র রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেছি। বিষমুক্ত হওয়ায় আমাদের জমির বরবটির চাহিদাও বেশ। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এই পদ্ধতিতে চাষ করেছি। ভালো ফলন পেয়েছি। অন্যরাও আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
কৃষক আবু বকর শিবলী,মনির হোসেন ও মন্তু মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের মাঠে বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ হয়। তবে হাতে গ্লাভস,মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ পরে সবজি চাষ আর দেখিনি। এখানে জমিতে যে কেউ প্রবেশ করতে পারেন না। ভালো ফলন হয়েছে। দামও সাধারণ সবজি থেকে ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আমরাও আগামীতে এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার জোনায়েদ কবির খান বলেন, পার্টনার প্রকল্পের আওতায় গ্যাপের ফসল উৎপাদনের পদ্ধতিটি ব্যতিক্রম। এতে নিরাপদ সবজি উৎপাদন হচ্ছে। যা মানব দেহের উপকারের সাথে পরিবেশের দূষণ কমায়। এই পদ্ধতিতে চাষ করা সবজি রপ্তানি করা যাবে। প্রথমে বিস্মিত হলেও এই পদ্ধতি কৃষকরা অভ্যস্থ হচ্ছেন। অনেকে চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
